ফেসবুক পরিচয়ে প্রেম, প্রেমিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ৮
জামাল আহমেদ, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : ফেসবুক পরিচয়ে প্রেম করে ভৈরব মেঘনা নদীর পাড়ে ঘূরতে এসে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করল প্রেমিকসহ দুজন। ঘটনার সাথে জড়িত সহযোগীরাসহ মোট ৮ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর রাত সাড়ে ৭ টায় ঘটনাটি ঘটে ভৈরব মেঘনা নদীর পাড় রেলওয়ের জোড়া সেতু সংলগ্ন এলাকায়। গ্রেফতারকৃতরা হলো, নরসিংদির রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দি গ্রামের মনিন্দ্র দাসের ছেলে প্রেমিক ও ধর্ষণে অভিযুক্ত পলাশ দাস (১৮), একই এলাকার সেন্টু মিয়ার ছেলে রাব্বি (১৯), ভৈরব শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার সুমন মিয়ার ছেলে ধর্ষনে অভিযুক্ত নির্জন ওরফে আরিয়ান (১৭), শহরের ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া এলাকার সুজন মিয়ার ছেলে সান (১৭), একই এলাকার আংগুর মিয়ার ছেলে আবদুল্লাহ (১৮), শহরের কমলপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে পাপন (১৮), শহরের চন্ডিবের এলাকার মিলন মিয়ার ছেলে হাসান (১৭), একই এলাকার আনাছ মিয়ার ছেলে ফুয়াদ (১৯)। গ্রেফতারকৃত ৮ জনের মধ্য দুইজন প্রেমিকা নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে ওই নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করে। অন্য ৬ জন অপরাধে সহযোগিতা করে বলে পুলিশ জানায়।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই প্রেমিকার বাবা রহমত আলী বাদী হয়ে ভৈরব থানায় একটি মামলা করে। প্রেমিকার বাড়ী কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা এলাকায়। আজ শুক্রবার আসামিদেরকে কিশোরগঞ্জ আদালতে চালান দেয়া হয় এবং একইসাথে প্রেমিক নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রেমিক পলাশের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ওই প্রেমিকা নারীর । বৃহস্পতিবার তারা নিজদের মধ্য ফোনে যোগাযোগ করে প্রথমে ভৈরবের মানিকদি এলাকার একটি সেতু সংলগ্ন রেস্টুরেন্টে আড্ডা কথাবার্তা হয়। পরে বিকেলের দিকে তারা দুজন প্রেমিক প্রেমিকা মেঘনা নদীর পাড়ে ঘূরতে আসে। এসময় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে নদীর পাড়ের একটি জঙ্গলের ঝোপে প্রেমিক পলাশ দাস প্রেমিকা ওই নারীকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি দেখে ফেলে ওই এলাকায় অবস্থানরত কয়েকজন ছিনতাইকারী। এসময় দুজনকে আটক করে দুটি মোবাইলসহ তাদের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। ঘটনার সুযোগ বুঝে ছিনতাইকারী নির্জন জোর করে এই নারীকে ধর্ষণ করে এসময়। ঘটনার সময় তার সাথের সহযোগী ছিনতাইকারীরা তাকে সহযোগিতা করে। এ সময় নারীর কান্না চিৎকারে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়। পরে জনতা পুলিশকে খবর দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এই নারীসহ ৮ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে নারীর বাবাসহ অভিভাবকরা এবং প্রেমিকের অভিভাবকরা রাত ১০ টায় থানায় এসে তদবির করলেও পুলিশ কাউকে ছাড়েনি। পরে রাত ১২ টায় প্রেমিক নারীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করে। মামলায় ধর্ষণের অভিযুক্ত করা হয় দুজনকে এবং সহযোগী হিসেবে অপর ৬ জনকে অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়।
এবিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রধরে মেঘনা পাড়ে ঘুরতে এসে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় কয়েকজন ছিনতাইকারী জড়িত রয়েছে। এব্যাপারে নারীর বাবা বাদী হয়ে রাতেই থানায় একটি মামলা করে। নারীকে শুক্রবার সকালে ডাক্তারি পরীক্ষা করতে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং আসামিদেরকে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।