Top Newsখুলনাসংবাদ সারাদেশ

লণ্ডভণ্ড বাগেরহাট, সাইক্লোন শেল্টারে ৪০ হাজার মানুষ, অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

অমিত পাল, বাগেরহাট  : গত ১৮ ঘণ্টা ধরে চলছে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব। এতে একরকম লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বাগেরহাটের রামপাল ও মোংলা উপজেলা। টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামপাল ও মোংলার অধিকাংশ মানুষ পানিবন্ধি হয়ে রয়েছে। অসংখ্য কাঁচা-আধাঁপাকা ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে। এ অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক ফসল চিংড়ি ও সাদা মাছের শতভাগ ঘের তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। রবিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গবাদি পশুর আশ্রয় কেন্দ্র, মুরগীর ফার্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষের বাড়ী ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্মকর্তা মো. মতিউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে মোহনাকে তিনি জানান, স্থায়ী অস্থায়ী মিলে মোট ১৬৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাতে ৮ হাজার ৮০০ দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তার মধ্যে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধিরা রয়েছেন। তাদের জন্য চিড়া, গুড়, দিয়াশলাই, মোমবাতিসহ অন্যান্য উপকরণ দেয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের খিচুড়ি রান্না করে দূর্গতদের দিতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ না কমা পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানের জন্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১১ টি মেডিকাল টিম গঠন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। প্রতি ঘণ্টায় ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে।

এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা মোহনাকে জানিয়েছেন, দুর্যোগের ক্ষতি কমাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে। মানুষের প্রধান আয়ের উৎস মাছের ঘের তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নিন্ম আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে, গাছপালা উপড়ে পড়েছে বা ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে। আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষের খাবার সরবরাহ ঠিক রাখতে কাজ করছি। কোথাও কোন খারাপ খবর পাওয়া গেলে সাথে জানালে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। এ জন্যে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না মোহনাকে জানান, এখনো পর্যন্ত প্রায় ১২০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল রাতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদেরকে খাবার, পানি সরবরাহ করা হয়েছে। দুর্যোগ যেহেতু চলমান আছে, তাই দুপুরে খিচুড়ির ব্যাবস্থা করতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ না কমা পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানের জন্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

author avatar
Mohona Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button