বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী তিনটি আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এতে আসনের ভাড়া সর্বোচ্চ ৩১৫ টাকা পর্যন্ত বাড়তে যাচ্ছে। আর বার্থের ভাড়া বাড়বে সর্বোচ্চ ৪৫৫ টাকা। আগামী ১৫ জুন থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হবে।
ডলারের দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে আবারও এসব রুটে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এটি নিয়ে করোনার পরের দুই বছরে আন্তঃদেশীয় ট্রেনের ভাড়া পঞ্চমবারের মতো বাড়তে যাচ্ছে। আগামী ১৫ জুনের যাত্রা থেকে যাত্রীদের নতুন এ ভাড়া গুনতে হবে।
আন্তঃদেশীয় ট্রেনের যাত্রীরা বলছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে দফায় দফায় ভারতগামী ট্রেনের ভাড়া বাড়াচ্ছে। ভাড়া বাড়াতে বাড়াতে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে ট্রেনের ভাড়া বাসের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এটি বিমানের ভাড়ার কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে। এমন অবস্থায় যাত্রী হারাতে পারে আন্তঃদেশীয় ট্রেনগুলো।
শুধু মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি সিটের ভাড়া ছাড়া বাকি প্রতিটি ট্রেনের ভাড়ার মধ্যে সরকারের ট্রাভেল ট্যাক্স অন্তর্ভুক্ত আছে।
আন্তঃদেশীয় রুটে বিআরটিসি-শ্যামলী বাসে ঢাকা থেকে কলকাতা পর্যন্ত ভাড়া লাগে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকা। একই বাসে ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি যেতে ভাড়া লাগে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা। অন্যদিকে বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কলকাতা যেতে ভাড়া লাগে আট থেকে নয় হাজার টাকা|
ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডলারের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে ট্রেনের ভাড়া সমন্বয় করা চলে না। তেলের দাম বাড়লেও ট্রেনের ভাড়া কিন্তু বাড়ে না। ভারত এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। দেশটিতে ডলার বা তেলের দাম বাড়লেও ট্রেনের ভাড়া কখনও বাড়ানো হয় না। অথচ আমাদের দেশে ডলারের কথা বলে কয়েকবার ভাড়া বাড়ানো হলো। এশিয়ার মধ্যে আমাদের দেশে ট্রেনের ভাড়া সর্বোচ্চ।
‘আন্তর্জাতিক রুটে আবারও ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর মধ্য দিয়ে বাস-মালিকদের সুবিধা করে দিচ্ছে রেলওয়ে। অন্যদিকে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ট্রেন ব্যবহারে অনীহা তৈরি করছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) শাহ আলম কিরণ শিশির ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ডলারের দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে বসে এ ভাড়া সমন্বয় করেছে। এর আগেও ভাড়া সমন্বয় করা হয়েছে, কখনও বাড়ানো হয়নি।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের উপপরিচালক (ইন্টারচেঞ্জ) মো. মিহরাবুর রশিদ খাঁন বলেন, ‘আমরা আগেই অর্ডার ইস্যু করে দিয়েছি। ভাড়া বাড়াইনি, মূলত সমন্বয় করা হয়েছে। আন্তঃদেশীয় ট্রেনের ভাড়া নিজ নিজ দেশের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।’