ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার সকাল ৭টা ২ মিনিটে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান সরকারপ্রধান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।
প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগ এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ঘোষণা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ১৯৬৬ সালের এই দিনে বাঙালির ম্যাগনা কার্টা ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানিদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
পাকিস্তানি শাসন-শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে স্বৈরাচার আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ডাকা এক জাতীয় সম্মেলনে পূর্ব বাংলার জনগণের পক্ষে বঙ্গবন্ধু ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকায় ফিরে ৬ দফার পক্ষে দেশব্যাপী প্রচারাভিযানে নামেন এবং বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে ৬ দফার গুরুত্ব তুলে ধরেন। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের মধ্য দিয়ে ৬ দফা হয়ে ওঠে পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তির সনদ।
১৯৬৬ সালের ৭ জুন ৬ দফা আদায়ে আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল চলাকালে ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জে সেদিন বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ ও আধা সামরিক ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) গুলি চালালে শ্রমিকনেতা মনু মিয়া, শফিক, শামসুল হকসহ ১১ জন নিহত হন।
৬ দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন এবং শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে সামরিক জান্তা আইয়ুব খানের সরকার ১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। তাতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার রাজপথ। ৬ দফার সেই আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়।