সরকারের নানামুখী সেবা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে লায়ন সদস্যদের সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল মাল্টিপল ডিস্ট্রিক্ট-৩১৫ বাংলাদেশ’ এর ৩৭তম বার্ষিক কনভেনশন ২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “বেসরকারি সেবামূলক সংস্থা হিসেবে পরিবেশ সংরক্ষণ, দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্নীতি দমন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি কার্যক্রমে লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল আরো বেশি অবদান রাখবে।”
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মানবকল্যাণ ও সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে লায়ন্স ক্লাব দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আপনারা দুস্থ ও অসহায় মানুষের সহযোগিতা, ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসন, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ও বৃক্ষরোপণ অভিযানসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছেন।”
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, লায়ন্স ক্লাব বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বর্তমানে সারা বিশ্বে ৪৯ হাজার ক্লাবের মাধ্যমে প্রায় ১৪ লাখ লায়ন সদস্য আর্তমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন।
সরকারি নানা অংশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকার ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে এবং নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। অর্থনীতি, যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়নসহ সকল ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ধারাবাহিকতায় সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে রাষ্ট্রপ্রধান সরকারের পাশাপাশি লায়ন সদস্যদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপ্রধান লায়ন সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, “সমাজের স্বচ্ছল নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি হিসেবে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, জলবায়ু, স্যানিটেশন, প্রজনন স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে আপনাদের কাজ করার পর্যাপ্ত সুযোগ ও সামর্থ্য-দুটোই আছে।”
তিনি আশা করেন, লায়ন সদস্যরা এসব জনকল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত হলে, আর্ত-মানবতার সেবার পাশাপাশি দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হবে এবং মানবসেবা ও অন্যান্য কল্যাণমূলক কাজে অন্যরাও উৎসাহিত হবে।
দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে এবং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার আলোকে একটি প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নির্মাণে সরকারকে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠানে লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল এর বিশিষ্ট ১৪ জন ব্যক্তিকে পুরস্কার প্রদান করেন।
তিনি সেখানে একটি ফটোসেশনেও অংশ নেন।
কাউন্সিল চেয়ারপার্সন লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুল ওয়াহাবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য লায়ন কাজী আকরামুদ্দিন আহমেদ, লায়ন শেখ কবির হোসেন, লায়ন মোসলেম আলী খান, লায়ন্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান লায়ন এ কে এম রেজাউল হক ও কনভেনশন চেয়ারম্যান লায়ন শামসুন্ন নাহার হক প্রমুখ।