ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ বেনি গ্যান্টজ। নেতানিয়াহুর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার, বছরজুড়ে গাজায় গণহত্যা চালিয়েও বন্দি মুক্তি আদায় করতে না পারার ব্যর্থতা এবং সুষ্ঠু আলোচনার মাঝে যুদ্ধ বন্ধ করতে না পারার জন্য বেনি গ্যান্টজ যুদ্ধকালীন জরুরি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। খবর আল জাজিরা।
গাজা যুদ্ধ নিয়ে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনার সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলনে বেনি গ্যান্টজ বলেন, ‘সত্যিকারের বিজয় অর্জনের পথে আমাদের বাধা দিচ্ছেন নেতানিয়াহু। ভারী হৃদয় নিয়ে কিন্তু পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাই জরুরি সরকার ছেড়ে যাচ্ছি।’ আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন নির্বাচন হওয়া উচিত, যা শেষ পর্যন্ত এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করবে, যা জনগণের আস্থা অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। আমি নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানাই, একটি সর্বসম্মত নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করুন।’
গ্যান্টজ বলেন, নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে আইন মেনে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করতে হবে। বিদ্রোহ অবশ্যই প্রয়োজন, তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তা চালিয়ে যেতে হবে। আমি বিদ্বেষকে উৎসাহিত করছি না, তবে একচেটিয়া শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রয়োজন। আমরা একে অপরের শত্রু নই। আমাদের শত্রু আমাদের সীমান্তের বাইরে।
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা ঘোষণা করতে ৮ জুন পর্যন্ত নেতানিয়াহুকে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন গ্যান্টজ। গত মাসে গ্যান্টজ বলেছিলেন, নেতানিয়াহু যদি ৮ জুনের মধ্যে গাজার জন্য যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা তৈরি না করেন, তাহলে তিনি সরকার থেকে বিদায় নেবেন।
সে হিসেবে গত শনিবার (৮ জুন) গ্যান্টজ পদত্যাগ করবেন বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে ওইদিন ইসরায়েলি বাহিনী এক অভিযানে গাজায় হামাসের হাতে বন্দী চার জিম্মিকে উদ্ধার করলে পদত্যাগের ঘোষণা স্থগিত করেন তিনি। ওইদিন বন্দী উদ্ধারের নামে ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে তাতে ২৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদিকে, গ্যান্টজের পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় এটি নয়।’
রোববার সংবাদ সম্মেলনে গ্যান্টজ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টকে একজন সাহসী নেতা হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তাকে ‘সঠিক কাজটি করার’ আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও তিনি এর অর্থ কী তা বিস্তারিত বলেননি।