মিয়ানমার থেকে ফের মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। বিস্ফোরণের শব্দে বাংলাদেশের টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় কম্পন সৃষ্টি হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত বিস্তৃত হচ্ছে। এ পরিস্তিতিতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড।
বুধবার (১২ জুন) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের ভারী গোলা ও মর্টারশেলের শব্দে শাহপরীর দ্বীপ এবং সেন্টমার্টিন কেঁপে উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সাবারাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসনাইন বলেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে ফের মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। বিস্ফোরণের শব্দে সীমান্তের এপারে টেকনাফ সাবারাং শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় কম্পন সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, দ্বীপের পূর্বে চলমান যুদ্ধে মিয়ানমারের রাখাইন মংডুতে হাসসুরাতা ও মেরুল্ল্যা গ্রামে ব্যাপক মর্টার শেলের শব্দ হচ্ছে। ওপারের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে এপারের বাড়ির উঠান। এছাড়া সে দেশের আকাশে যুদ্ধবিমানও দেখা গেছে। জলসীমায় সে দেশের জাহাজ দেখা যাচ্ছে।
এ ছাড়া মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ফায়ার করা দুটি গুলির অংশও পড়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। মর্টারশেলের শব্দ শুনে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মন্তব্য জানাচ্ছেন। কেউ বলছেন মর্টারশেলের শব্দগুলো এত প্রকট ছিল যে মনে হয় ভূমিকম্পকে হার মানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তরের অনেক ঘাঁটি দখলে নেওয়ার পর নতুন করে লম্বাবিল এলাকার পূর্বে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কুমিরখালীতে যে বিজিপির ঘাঁটি রয়েছে সেটি দখলের জন্য বিদ্রোহীরা এমন গোলাগুলি চালিয়েছে।
মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের দিকে গুলি চালানোর কারণে সাত দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ফলে ওষুধ, খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সংকটে পড়েছেন দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলাচলের বিকল্প রুট খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সকালে খাবার ও পন্যবাহি দুটি জাহাজ টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সারারাত মিয়ানমার থেকে ফের মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাটছে না।