Top Newsজাতীয়

আনার হত্যা মামলায় ৮ দিনের রিমান্ডে মিন্টু

মোহনা অনলাইন

এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন ডিবি পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন-গ্রেফতার আসামি সাইদুল করিম মিন্টুকে (৬০) পুলিশ স্কটের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দপূর্বক এই মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করিতেছি যে, মামলার তদন্তে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িত গ্রেফতার ও  আদালতে সোপর্দকৃত বহুল আলোচিত এমপি আনার অপহরণ মামলার অন্যতম আসামী শিমুল ভুইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে আসামি সাইদুল করিম মিন্টুর সংশ্লিষ্টতা বর্ণিত আছে। জবানবন্দিতে ভিকটিমকে প্রলুব্ধ করে অপহরণ তথা হত্যা সংশ্লিষ্টতার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্তে সাইদুল করিম মিন্টুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।

এই সংক্রান্তে বর্তমানে পুলিশ রিমান্ডে থাকা আসামি কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু এমপি আনার অপহরণ সংক্রান্তে সাইদুল করিম মিন্টুর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথা দিয়েছেন। ঘাতক শিমুল ভূইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন যে, চলতি বছরের ৫/৬ মে এমপি আনারকে প্রলুব্ধ করে অপহরণ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিন আসামী সাইদুল করিম মিন্টুর সঙ্গে হোয়াটসআ্যাপে কথা বলেন এবং এমপি আনার হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সাপেক্ষে আর্থিক লেনদেনের কথা বলে।

পুলিশ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদরত গ্যাস বাবু আরো জানায় যে, হত্যাকাণ্ডের পরে ঘাতক দলের প্রধান শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে সে প্রতিশ্রুত টাকা লেনদেনের বিষয়ে ডিজিটালি এবং ফিজিক্যালি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রমাণস্বরূপ ছবি আদান প্রদান করেছেন।

এ মামলায় গত ৩ জুন আসামি শিলাস্তি রহমান, ৪ জুন তানভীর ভূঁইয়া এবং ৫ জুন সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গত ২৪ মে তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন অপর একটি আদালত।

গত ২৩ মে মিন্টুর কাছ থেকে পাওয়া শিমুল ভুইয়ার দাবি করা টাকার আংশিক তার মাধ্যমে ঘাতক শিমূল ভূইয়াকে দেওয়ার কথা ছিল। এসব তথ্যের ১২ জুন ঢাকা মহানগরের ধানমণ্ডি থানাধীন জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল এলাকা হতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বর্ণিত আসামী সাইদুল করিম মিন্টু (৬০) কে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি মিন্টুকে এমপি আনার অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনায় আরো কেউ জড়িত আছে কি না সে ব্যাপারে জানতে চাইলে মিন্টু সত্য মিথ্যার সংমিশ্রণে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছে।  মামলার ঘটনার সহিত আসামী মিন্টুর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করলে একেক সময় একেক রকম তথ্য প্রদান করছে। ঘটনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর সে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। মামলার মূল রহস্য উদঘাটন সহ সাইদুল করিম মিন্টুর ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা তথা হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা উদঘাটন এবং অজ্ঞাতনামা পরিকল্পনাকারীদের শনাক্তকরণ, গ্রেফতার, সঠিক নাম ঠিকানা সংগ্রহের নিমিত্তে আসামিকে পুলিশ রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।

এ ঘটনায় ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। মামলার এজাহারে এমপির মেয়ে উল্লেখ করেন, ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই। ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো’।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজখবর করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে বাবার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস কলকাতার বরাহনগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। বাবাকে খোঁজাখুঁজি অব্যাহত রাখি। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবাকে অপহরণ করে। বাবাকে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button