জলের মধ্যে থাকা লক্ষাধিক মাইক্রোঅর্গেনিজম, মোল্ড, ফাঙ্গাস এবং ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলতে তামার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে তামার একাধিক গুণাগুণ জলের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করার ফলে কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
তামায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা একদিকে যেমন ক্যান্সার বিরোধী, তেমনি অন্যদিকে শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বের করে দিতেও সাহায্য করে। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র অনুসারে প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে তামার গ্লাসে রাখা পানি পান করলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তামার গ্লাসে জল খেলে আরও উপকার পাওয়া যায়। যেমন…
থাইরয়েড গ্রন্থির কাজে ভারসাম্য বজায় রাখে: শরীরে সঠিক মাত্রায় তামা থাকলে তা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ আটকাতে সহায়তা করে। এবং এর কাজের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
অ্যানিমিয়া দূর করতে সাহায্য করে: রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে, তাহলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। তামা পানিতে আয়রন সঞ্চার করে, ফলে রক্তে আয়রনের মাত্রা বাড়তে পারে। তাই তামার বোতলে পানি পানে অ্যানিমিয়ার সমস্যা কমতে পারে। এর পাশাপাশি, আয়রন কম থাকলে শ্বেত রক্তকণিকাও কমতে পারে।
হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ করে: শরীরে তামার পরিমাণ কম থাকলে তা রক্তচাপে তারতম্য ঘটায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। এবং তামা কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে রাখে। সব মিলিয়ে হাইপারটেনশন রোধ করতে এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ফলে শরীরে তামার পরিমাণ ঠিক রাখতে তামার পাত্রে পানি পান করা যেতে পারে।
ক্যানসার দূর করে: তামায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ক্যানসার বিরোধী। পানির সঙ্গে এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মিশে শরীরের কোষ বিভাজনের সঠিক প্রক্রিয়ায় নজর রাখে। যার ফলে ক্যানসার দূরে থাকার সম্ভবনা থাকে।
ত্বকে বলিরেখা পড়া রোধ করে: তামায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস থাকে, যা নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে। ফলে বলিরেখা পড়ে না। ত্বকও ভালো থাকে।
হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখে: তামার পাত্রে খাবার খাওয়া, তামার গ্লাসে বা বোতলে পানি পানের ফলে হজমের সমস্যা দূর হতে পারে। কারণ তামা হজমে সাহায্য করে। এতে থাকা উপাদান ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে, পেটের সমস্যা দূর করে, মেটাবলিজম ঠিক রাখে। তবে, মনে রাখতে হবে, লেবুর পানি বা গরম পানি যেন তামার পাত্রে না রাখা হয়।
ওজন হ্রাসে সাহায্য করেঃ তামার গ্লাসে জল খাওয়ার অভ্যাস করলে একদিকে যেমন হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, তেমনি শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বিও ঝড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মেদ কমতে থাকে।