জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য পদচ্যুত কর্মকর্তা মতিউর রহমানের সম্পদের ফিরিস্তি যেন শেষ হবার নয়। ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর একে একে বের হয়ে আসছে অঢেল সম্পদের চিত্র। অভিজাত আবাসিক এলাকা ছাড়িয়ে পুবাইল, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও নরসিংদীতে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মতিউর। তার দুই স্ত্রী ও সন্তানদের নামেও রয়েছে শত কোটি টাকার সম্পত্তি।
এনবিআরের সদস্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি মতিউরকে। তবে এখনও ভয়ে মুখ খুলতে চান না তার দখল ও অত্যাচারের শিকার বহু মানুষ।
এক সরকারি কর্মকর্তা আর তার পরিবারের সম্পদের হিসেব যেন বড় কোনো ধনকুবেরকেও হার মানিয়ে যাবার মতো গল্প। এনিবআরের সাবেক সদস্য মতিউর যেমন ক্ষমতার প্রভার খাটিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক। তেমনি স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকীকে বানিয়েছেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান। লাকীর নামেও রয়েছে শত কোটি টাকার সম্পদ। এমনকি, তার দখল আর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
রায়পুরার বাইরে লায়লা কানিজের সম্পদের খোঁজে এনটিভি টিমের গন্তব্য ছিল গাজীপুরের পুবাইলে। সম্পদের খোঁজ করতে গিয়ে মেলে মোক্তার হোসেন নামে এক বৃদ্ধের। তিনি অভিযোগ করেন, তার প্রায় ৬৬ শতাংশ জমি জাল দলিল বানিয়ে দখল করেছেন লায়লা কানিজ লাকী ও তার বাহিনী।
শুধু জমি নিয়ে ক্ষান্ত হননি লাকী, মোক্তারের বিরুদ্ধে দিয়েছেন চারটি মামলা। প্রতিটি মামলা খারিজ করে দেন আদালত। রায় পক্ষে এলেও জমি এখনও ফিরে পাননি মোক্তার।
দখলকৃত এ জমির পাশেই প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে নির্মিত হয়েছে আপন ভুবন পিকনিক ও শুটিং স্পট। বিশাল এ রিসোর্টে আছে ১৮টি কটেজ। যেখানে আবার অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে এমন তথ্যও পাওয়া গেছে।
শুধু সম্পদের পাহাড়ই নয়, এলাকার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণও নেওয়ার অভিযোগ আছে লাকীর বিরুদ্ধে। ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলতেও চান না অনেকে।
রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর ও তার স্ত্রীর নামে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় রয়েছে নির্মাণাধীন ভবন ও একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট। বিশাল এসব ভবন অবৈধভাবে আয়ের ফসল বলে অভিযোগ রয়েছে, যার তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।