সুনামগঞ্জে রাতভর বৃষ্টি ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এ অঞ্চলে দ্বিতীয় ধাপে বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। এতে প্রথম দফার বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও বন্যায় দুর্ভেোগে পড়েছে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের মানুষেরা।
রোববার (৩০ জুন) সকাল থেকেই পাহাড়ি ঢলের কারণে পানি যাদুকাটা নদী হয়ে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের আনোয়ারপুরের পাশের ডুবন্ত অংশ প্লাবিত করেছে। এরপর থেকে এই অংশে খেয়া নৌকা ব্যবহার করছেন যাত্রী ও স্থানীয়রা। এর কয়েক কিলোমিটার পরেই শক্তিয়ারখলা সড়কের একশ মিটার ডুবন্ত অংশও প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া দুর্গাপুর অংশেও পানি উঠেছে। এরইমধ্যে অনেকের বাড়ির আঙিনায় পানি প্রবেশ করেছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এতে সুনামগঞ্জে নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। রোববার বিকেল তিনটায় পানি বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউব) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে মাত্র ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৮৬ মিলিমিটার। এ কারণে উজানের পানিতে সীমান্তের নিচু সড়ক প্লাবিত হয়েছে।
রোববার দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, শতাধিক মানুষ খেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। অস্থায়ী ১৫-২০টি খেয়া নৌকায় পথচারীরা পারাপার হচ্ছেন। এসব এলাকার বাড়ি-ঘরের আঙ্গিনায়ও পানি প্রবেশ করেছে।
মধ্যনগর উপজেলার বংশিকুন্ডা ইউনিয়নের বাসিন্দা ইকবাল আহমদ রোববার সুনামগঞ্জ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের একটি কোর্সের পরীক্ষায় অংশ নিতে রওনা দেন। তিনি বলেন, শনিবার থেকে টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সড়কের কয়েকটি অংশ ডুবে গেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সজীব আহমদ বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টা সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। এরপরের পাঁচদিনও বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আছে। এদিকে সারারাত সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হওয়ায় কারণে উজানের পানিতে সীমান্তের নিচু সড়ক প্লাবিত হয়েছে। এতে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।