Top Newsজাতীয়

চীনের জিডিআই-এ বাংলাদেশকে যুক্ত করতে চায় বেইজিং?

মোহনা অনলাইন

গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই)-এ বাংলাদেশকে পাশে চায় চীন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এ উদ্যোগে ঢাকাকে পাশে পেতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে দেশটি। আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফরে জিডিআই সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে কোনো নিশ্চিত বার্তার ইঙ্গিত দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, সরকারপ্রধানের বেইজিং সফরে বেশ কিছু সমঝাতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে উভয়পক্ষ। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-জিডিআই, রাজনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য সহায়তা, টাকা-ইউয়ানে লেনদেন, ব্লু-ইকোনোমি, বিনিয়োগ সুরক্ষা, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সমীক্ষা, ডিজিটাল অর্থনীতি, একাধিক মৈত্রী সেতু নির্মাণ ও সংস্কার, মানুষে মানুষে যোগাযোগ এবং চীনের তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভির মধ্যে সহেযাগিতা। এছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদের তিনটি স্টেশনের বন্যা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক নবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরে জিডিআই সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই না হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকার এক কূটনীতিক বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এটা প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল হুমকি হিসেবে দেখছে বেইজিং। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলোকে অংশীদার বানাতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত—এ চার দেশের জোট কোয়াড। চীনবিরোধী বলে পরিচিত কোয়াড জোটে বাংলাদেশকে অনেক আগ থেকে টানার চেষ্টা করছে সদস্য দেশগুলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-তো ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশকে অংশীদার মনে করে। সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব জিডিআইয়ে বাংলাদেশকে যুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বেইজিং।

২০২২ সালের আগস্টে ঢাকা সফর করেছিলেন চীনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই (তিনি বর্তমানে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী)। সেই সফরে চীনের প্রেসিডেন্টের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) ও গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ (জিএসআই)-এর মতো উদ্যোগে বাংলাদেশকে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে বলেছিলেন, জিডিআইয়ে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ইতিবাচক।

গত বছরের (২০২৩) ২৩ সেপ্টেম্বর চীনে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে অতিথি করতে চেয়েছিল চীন। তবে ওই সময়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন বলে সরকারপ্রধান চীনে যেতে পারবেন না বলে বেইজিংকে জানানো হয়েছিল।

পরে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফরে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে দেশটি। গত রমজানের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফর করার একটা ‘তড়িঘড়ি’ প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ঢাকার পক্ষ থেকে বেইজিংকে জানানো হয়েছিল, সরকারপ্রধান রমজান মাসে বিদেশ সফর করেন না।

এপ্রিলের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। রাষ্ট্রদূত বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে আগামী জুলাইয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেছেন সরকারপ্রধান।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই বেইজিং সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ চীন সফর করেছিলেন। তখন বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

গত বছরের আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন হাসিনা-শি। ২০১৯ সালের পর দুই শীর্ষ নেতা ওই বৈঠকে বসেন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button