হুমায়ূন আহমেদের নাটক মানেই শাওনের উপস্থিতি একসময় এমনটাই ভাবা হতো। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর মেহের আফরোজ শাওনকে অভিনয়ে আর দেখা যায়নি। সর্বশেষ অভিনেত্রীকে দেখা গেছে হুমায়ূন আহমেদের ‘আমার আছে জল’ সিনেমায়। তবে এবার বিরতি ভেঙে দীর্ঘ ১৭ বছর পর বড়পর্দায় ফিরছেন টেলিভিশন এবং সিনেমার পরিচিত মুখ মেহের আফরোজ শাওন।
মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজিবিষয়ক উপন্যাস ‘নীল জোছনার জীবন’ অবলম্বনে নির্মিত সিনেমায় অভিনয় করছেন তিনি।
শাওন তার নতুন সিনেমা সম্পর্কে বলেন, ‘গল্প আর চরিত্র পছন্দ হয়েছে বলেই আরেফীনের সিনেমায় কাজ করছি। এখন বাকিটা বলতে পারব শুটিং শুরু করার পর। আশা করছি ভালো একটি কাজ হবে।’ সিনেমা সম্পর্কে শাওন আরো জানান, প্যারাসাইকোলজি নিয়ে নির্মিত হচ্ছে নীল জোছনা। এতে তাকে শহুরে এক নারীর চরিত্রে দেখা যাবে। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর সিনেমার শুটিং করব। তবে প্রযোজক ও পরিচালকের পলিসিগত কারণে এখনই সিনেমা কিংবা আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাইছি না।’
শাওন জানান, ১৭ বছর পর সিনেমায় যুক্ত হলেও অভিনয়ে ফিরলেন ১৩ বছর পর। ২০১১ সালে সবশেষ অভিনয় করেছিলেন ‘স্বর্ণকলস’ নাটকে। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। আগামীকাল ঢাকায় নীল জোছনা সিনেমায় নিজের অংশের শুটিংয়ে অংশ নেবেন শাওন। সিনেমাটি তৈরি হচ্ছে মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজি-বিষয়ক উপন্যাস ‘নীল জোছনার জীবন’ অবলম্বনে।
শাওনকে যুক্ত করা প্রসঙ্গে ফাখরুল আরেফীন খান বলেন, ‘যখন থেকে এ সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছি, ঠিক সে সময়ই মনে হয়েছে জয়া হক চরিত্রের জন্য মেহের আফরোজ শাওন মানানসই। সে জায়গা থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তিনি চিত্রনাট্য দেখে সিনেমায় অভিনয়ের জন্য রাজি হন।’
সিনেমাটি নিয়ে ফাখরুল আরেফীন খান আরো বলেন, ‘এ সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম প্রায় ছয় বছর আগে। সেই ২০১৮ সালের শেষের দিকে। প্যারাসাইকোলজি নিয়ে আমার ধারণা এর আগে বাংলাদেশে কোনো কাজ হয়নি। আর সে কারণেই যখন আমি মোশতাক আহমেদের উপন্যাসটি পড়ি, তখনই চিন্তা করি সিনেমা বানানোর। এরপর ২০১৯ সালে করোনা এবং আমার “জেকে ১৯৭১’’ সিনেমার কারণে কাজটি বন্ধ ছিল। এরপর আবারো গত বছরের শুরু থেকে কাজটি শুরু করি।’
শাওনের বিনোদন জগতে শুরুটা ছিল ১৯৮৯ সালে ইবনে মিজান পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আলাল দুলাল’-এ শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয়ের মাধ্যমে। সেখানে তিনি অভিনয় করেছিলেন তৎকালীন খ্যাতিমান নায়িকা সুচরিতার ছোটবেলার চরিত্রে। তবে তিনি আলোচনায় আসেন শিশু শিল্পীদের জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি’তে বিজয়ী হওয়ার পর। তার নামের সঙ্গে একাধারে জুড়ে ছিল নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী।