দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনে দেওয়া এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি আর সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা গর্বের অবকাঠামো ‘পদ্মা সেতু’ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান আজ (শুক্রবার)। আর্থিক, প্রকৌশল এবং রাজনৈতিক ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ২০২২ সালে দীর্ঘতম সেতুটি উদ্বোধন করার সঙ্গে সঙ্গে বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হয় বাংলাদেশের।
এবার সব প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে স্বপ্নের এ সেতুর প্রকল্পের কাজের সমাপনী ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে অনুষ্ঠিত হবে এই অনুষ্ঠান। এখানেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছিল ২০২২ সালের ২৫ জুন।
আজ (শুক্রবার) দুপুর ৩টায় মাওয়া উত্তর থানা এলাকায় এক সুধী সমাবেশের মধ্য দিয়ে সেতু প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি সমাপ্ত ঘোষণা করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের দীর্ঘতম এ সেতুর তৈরিতে অনেক বাধা-বিপত্তি পার করতে হয়েছে। এ সেতু প্রকল্প পুরোটাই হয়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে।
বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে সভাপতির বক্তব্য রাখবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধান অতিথির ভাষণ রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্ব ব্যাংকসহ চারটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের ওপর ভর করে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কথা বলে এ প্রকল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় সংস্থাগুলো। পরে বঙ্গবন্ধুকন্যা সিদ্ধান্ত নেন নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৪ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে সেতুর কাজ শুরু হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, ‘২০২২ সালের ২৫ জুন আমাদের গর্বের, অহংকারের পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এই পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হয়েছে। এই সমাপ্তি উপলক্ষে মাওয়া প্রান্তে একটা সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এই সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী থাকার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।’
গত দুই বছরে পদ্মা সেতু দিয়ে এক কোটি ২৭ লাখ যানবাহন চলাচল করেছে। ২৯ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে এক হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে যান চলাচল করেছে প্রায় ১৯ হাজার। প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা।