ইরাকের কারবালার শোককে ধারণ করে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল করেছে শিয়া সম্প্রদায়। বুধবার (১ জুলাই) সকাল ১০টায় পর বের হওয়া এই মিছিলে শিয়া সম্প্রদায়ের হাজারো মানুষ অংশ নিয়েছেন।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল শুরু শিয়া সম্প্রদায়। ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ শোকের মাতমে তাজিয়া মিছিল হোসেনি দালান থেকে যাত্রা করে। কালো পোশাক পরে অংশগ্রহণকারী অনুসারীরা মিছিল নিয়ে এগিয়ে চলেন। নানা বয়সী মানুষ মিছিলে অংশ নিয়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ বলে শোকের মাতমে শরিক হয়েছেন।
খালি পায়ে, বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম তুলে, লালবাগ, আজিমপুর, নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত ঘুরে, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় হয়ে ধানমণ্ডির দিকে এগিয়ে যায়। পরে ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে প্রতীকী ‘কারবালা’ প্রান্তে গিয়ে শেষ হবে শোকের মিছিল। তাজিয়া মিছিলে কারবালার স্মরণে কালো মখমলের চাঁদোয়ার নিচে কয়েকজন বহন করেন ইমাম হোসেনের (রা.) প্রতীকী কফিন। মিছিলের সামনে ছিল ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেনের দুটি প্রতীকী ঘোড়াও। ছোট-বড় এসব প্রতীকী সমাধিতে অনেকেই বিভিন্ন নিয়তে টাকাপয়সা দান করছেন। কেউ কেউ কবুতর, মুরগি, হাঁস দান করেন।
মিছিলটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য পুলিশ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পুরান ঢাকার লালবাগের হোসেনি দালান ইমামবাড়া, বড় কাটারা ইমামবাড়া ও এর আশপাশের শিয়া সম্প্রদায়কেন্দ্রিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া (শোক) মিছিল ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। দিবসটি নির্বিঘ্নে পালনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া আশুরায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
সুষ্ঠুভাবে তাজিয়া মিছিল সম্পন্ন করতে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি বহন নিষিদ্ধ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একই সঙ্গে আতশবাজি ও পটকা ফাটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মিছিলে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি অনেকেই মিছিল দেখতে এসেছেন।