সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলার প্রতিবাদের সরব হয়েছেন দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকারা। দাবি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এবার চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার পোস্টে লিখেছেন, ‘আপনারা যারা ভাবছেন আন্দোলনটা স্রেফ একটা চাকরির জন্য, তারা বোকার স্বর্গে আছেন। আপনারা এর সবগুলা স্লোগান খেয়াল করেন। দেখবেন, এই আন্দোলন নাগরিকের সম মর্যাদার জন্য। এই আন্দোলন নিজের দেশে তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে না বাঁচার জন্য।
ফারুকীর ভাষ্য, ‘পাবলিক সারভেন্ট শব্দটা বেশ ভালো। নির্বাচিত (!) প্রতিনিধি বা যে কোনো সরকারি বেতনভুক্ত ব্যক্তিকে এই শব্দেই ডাকা উচিত সবসময়। এই আন্দোলন সেই পাবলিক সারভেন্টদের মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে, আপনি আমার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। অল পাওয়ার টু দ্য পিপল। অল পাওয়ার টু দ্য ইয়ুথ। প্রেয়ারস ফর মাই ফেলো সিটিজেনস। শহিদের রক্ত কখনো বিফলে যায় না।’
ব্যক্তিগত কৈফিয়ত! এই যে এত লম্বা লেখাটা লিখলাম, এটা আসলে আমি লিখিনি। আমি মুখে বলেছি একজন ট্রান্সক্রাইব করে দিয়েছে। যারা আমার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানেন, তারা জানেন যে; আমি শারীরিকভাবে এখনো পুরোপুরি সুস্থ না! ফলে আমার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সীমিত।
কোটা আন্দোলন নিয়ে আমি কিছুদিন আগে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে সরিয়ে ফেলেছি কারণ, একটা স্ট্যাটাস দিলে আমার মাথার মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়! পরবর্তীতে আরেকটা কথা লিখতে ইচ্ছা হয়।
এবং লিখতে থাকলে যত বেশি এংগেজড হই সেটা আমার শারীরিক অবস্থার জন্য ভালো না। আমার শরীর সুস্থ করার জন্য যে লড়াইটা সেটা এক দীর্ঘ লড়াই। সেই লড়াইটা করার অনুমতি নিশ্চয়ই পেতে পারি?
কিন্তু দুর্ভাগ্য জনক বিষয় হচ্ছে, আমার স্ট্যাটাসটা সরিয়ে ফেলার পর থেকে আজকে পর্যন্ত বিভিন্ন অনলাইন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে লিখেছেন যে, আমি দালাল হয়ে গেছি এই কারণে চুপ হয়ে আছি।
এখন সোশ্যাল মিডিয়ার বিপদ হচ্ছে আপনাকে প্রতিদিন প্রমাণ করতে হবে আপনি কে! আজকে রাষ্ট্র যে অবস্থায় এসেছে এ অবস্থায় আসার শুরু যখন হয়েছিল তখন থেকে তারা যদি আমার ফেসবুকের লেখাগুলো একটু গবেষণা করে দেখতো।
তাহলে বুঝতে পারত আমি কে, আমি কি বলেছি। এবং কি বলার কারণে আমি বারবার বিপদে পড়ি! কোন রিসার্চ নাই, জাস্ট ঢালাও ভাবে দালাল বলে দাও।
আজকে যে বাইনারি চলছে, হয় তুমি আমার পক্ষে না হয় তুমি আমার বিপক্ষে। এই বাইনারির বিপক্ষে আমি ২০১৪ সালে একটা লেখা লিখেছিলাম ‘কিন্তু এবং যদির খোঁজে’ বাংলাদেশ প্রতিদিনে ছাপা হয়েছিল। মনে রাখতে হবে ওই সময় ছিল শাহবাগের সময়। ২০১৩ তে যখন শাহবাগে আন্দোলন শুরু হলো তখন, বাইনারি এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যে বলতে শুরু হল ‘কিন্তু এবং যদি’ যে বলবে সেই রাজাকার। সেই ছাগু।
সেই ছাগু ট্যাগটাকে আমি গলার মালা হিসেবে নিয়ে আমি লিখেছিলাম “কিন্তু এবং যদির খোঁজে”। কিছুদিন আগেও আমি বলেছি, স্বাধীনতাকে প্রশ্ন করতে পারাটাই স্বাধীনতা!