“বিএনপি ও জামায়াত-শিবির বিদেশে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এবং দেশের উন্নয়নকে ধ্বংস করার জন্য দেশব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে” বলে মন্তব্য করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে সহায়তা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর রামপুরায় বিটিভি ভবন পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অবশ্যই দেশের যেখানে তারা অবস্থান করছে, তল্লাশি করে চিহ্নিত করতে হবে। তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে আমি দেশবাসীর সমর্থন চাইছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপি-জামায়াত ২০১৩ সালে দেশব্যাপী অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়। তারা ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি, ২৯টি ট্রেন ও আটটি লঞ্চে আগুন দেয়। এবার ১৭ জুলাই সকাল থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।”
“তবে, এবারের আগুন দেওয়ার বৈশিষ্ট্য আগেরগুলোর চেয়ে আলাদা। তারা এবার আগুন লাগাতে বারুদ ব্যবহার করেছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে,” যোগ করেন শেখ হাসিনা।
’৯৬ সালে ২১ বছর পর সরকারে এসে এবং দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে বিটিভির প্রভূত উন্নয়ন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে এত বছর পর এসে দেখা গেল সেই ’৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যে নারকীয় তাণ্ডব, তারই যেন একটা বীভৎস রূপ বাংলার মানুষ দেখছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কিন্তু টেলিভিশনের ওপর হাত দেয়নি বা কেউই কখনো দেয়নি। কিন্তু আজকে এই টেলিভিশন সেন্টারকে যারা এইভাবে পোড়ালো, একটা কিছু নেই যে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাহলে এরা কারা? এরা কি এদেশেরই মানুষ? এদের কি এই দেশেই জন্ম ? একটা দেশকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার চিন্তা নিয়েই যেন তাদের এই আক্রমণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল যেটা ছিল সারাবিশ্বের প্রতিটি বাঙালির কাছে একটা সম্পদ, সেটাকে ধ্বংস করল। যার মাধ্যমে মানুষ অল্প সময়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারতো। আজ সেটা বন্ধ। আবার সেই ট্রাফিক জ্যাম, আবার সেই পূর্বের অবস্থায় মানুষকে ফেলে দিলো। আর এই টেলিভিশন সেন্টারে তারা যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে যেসব জিনিস মানুষের সেবা করে মানুষের জন্য কাজ করে সেই জায়গাগুলোতেই আঘাত।
তিনি বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতেও আগুন দিয়ে পোড়ালো। গাড়িগুলো, এমনকি জাপান থেকে আনা অত্যাধুনিক সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িগুলো পুড়িয়েছে, পানি শোধনাগারে হামলা করতে গেছে, পয়ঃশোধনাগারে হামলা-এটা কি হচ্ছে? কি তাদের মানসিকতা?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা এদেশের মানুষের রুটি-রুজির ওপর হাত দিয়েছে, রুটি-রুজির পথ বন্ধ করে দিয়েছে, তাদের বিচার জনগণকেই করতে হবে। কারণ জনগণই এ দেশের একমাত্র শক্তি।”