প্রায় তিন দিন বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন আবারও শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে পশ্চিমবঙ্গে পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে কড়া নিরাপত্তা মধ্য দিয়ে এই লেনদেন শুরু হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে পেট্রাপোল বন্দরের কার্যক্রম স্থগিত ছিল। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সেই কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। ভারত সরকারের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, পেট্রাপোল বন্দর হয়েই বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যিক লেনদেন হয়।
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি বুধবার এনডিটিভিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “বেনাপোল এবং হিলি বন্দরের কর্মকর্তারা আজ বৈঠক করেছেন। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল ৬টা থেকে বেনাপোল খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
বাংলাদেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলের অপর পাশেই ভারতের পেট্রোপোল চেকিং পোস্ট। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মহাপরিচালক গতকাল পেট্রোপোল চেকিং পোস্ট সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল হিলি বন্দর দিয়ে যে কয়েকটি মালবাহী কার্গো ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে সেগুলোতে কালো পাথর, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ, হলুদ এবং গমের ভুসি। অর্থাৎ অধিকাংশই পচনশীল পণ্য।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হওয়া শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে নয়াদিল্লিতে অবস্থান করছেন তিনি এবং তার ছোটবোন শেখ রেহানা। বাংলাদেশ ত্যাগের আগে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গিয়েছেন তিনি।
গত জুন মাসে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যাবস্থা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়ে রায় ঘোষণার পর ১ জুলাই থেকে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ১৪ জুলাইয়ের পর থেকে সেই আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে, রূপান্তরিত হয় সরকারপতন আন্দোলনে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও আন্দোলনকারীদের মধ্যকার সংঘাত-সহিংসতায় গত প্রায় তিন সপ্তাহে নিহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে গত ৫ আগস্ট দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি বিমানে চেপে ভারতে যান শেখ হাসিনা এবং তার বোন। বর্তমানে রাজধানী নয়াদিল্লির কাছে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন তারা।
শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর থেকেই বন্ধ ছিল হিলি এবং বেনাপোল স্থলবন্দর।