‘গণহত্যার দায়ে দেশের মানুষ যদি আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে চায়, তবে সে দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করবে।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম এ কথা জানিয়েছেন।
সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে কেন্দ্রীয় জমায়েত কর্মসূচি পালনকালে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সারজিস আলম।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ স্বৈরাচারের যারা দোসর ছিল, সেসব দুষ্কৃতকারীরা নতুন একটি গণ-অভ্যুত্থান করে বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা করছে। এটি কখনও হতে দেওয়া হবে না। ছাত্র সমাজ মাঠে আছে, থাকবে।’
এ সময় পাল্টা গণ-অভ্যুত্থান করলে তাদের আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সারজিস আলম।
চার দফা দাবিতে সপ্তাহব্যাপী ঘোষিত ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে সারজিস আলম বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছি। এসব দাবি বাস্তবায়নে কালবিলম্ব করলে গদি থেকে নামানোর মতো কৌশল শিক্ষার্থীদের জানা আছে।’
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) চার দফা দাবিতে ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির ডাক দিয়ে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর অংশ হিসেবে ওইদিন ঢাকাসহ সারা দেশে রোডমার্চ কর্মসূচি ছাড়াও আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টায় শাহবাগে কেন্দ্রীয় জমায়েতে অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চার দফা দাবিগুলো হলো—
১. ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা।
২. সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলসহ যারা পরিকল্পিত ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা করেছে, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা-মামলা ও হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদ বারবার কায়েমের চেষ্টা করেছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।