কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্রদের সাথে রাজপথে একাত্ম ছিলেন মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া। সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও রাজপথে নেমে শামিল হয়েছিলেন প্রতিবাদে। তবে সাম্প্রতিক কিছু বিষয়ে মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন অভিনেত্রী। ফেসবুকে মত প্রকাশ করেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, “ছাত্ররা যখন আন্দোলন শুরু করেছিল, আমরা ওদের সঙ্গে একাত্ম হলাম, মাঠে নামলাম। ওদের চাওয়া অনুযায়ী বাকস্বাধীনতা, ন্যায়বিচার—এসবের সপক্ষেই তো আমরা পথে নেমেছি। কিন্তু পটপরিবর্তনের পর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাস্তাঘাট—সবখানেই চিত্রটা কেমন যেন বদলে গেছে। রাস্তায় যারা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজে নেমেছিল, তারা ভীষণ রূঢ় আচরণ করছে।
প্রথম দু-তিন দিন কিন্তু ঠিকঠাক ছিল। তখন আমরাও যাঁর যাঁর জায়গা থেকে সহযোগিতা করেছি, ওদের খাবার দিয়েছি। কিন্তু খারাপ তখনই লেগেছে, যখন ওরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মতো চেকআপ শুরু করেছে। এটা তো ওদের কাজ নয়। রাস্তাঘাটে একজন মানুষকে দাঁড় করিয়ে, গাড়ির স্টিকার খুলে দেওয়া, ব্যক্তিগত জিনিসপত্র তল্লাশি করা তো উচিত নয়।
এসবের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ দরকার। আমার কাছে একজন পুলিশ সদস্য এসেও যদি তল্লাশি করতে চান, আমি কিন্তু তাঁকেও জিজ্ঞেস করি, আপনার কাছে কি সার্চ ওয়ারেন্ট আছে? অনুমতি ছাড়া তো তল্লাশি করা যাবে না।”
শেখ হাসিনার পতনের পর অনেকেই বলছেন, গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ফিরে এসেছে। তবে ১৫ আগস্টের বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে টয়ার মনে। তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট যেটা হয়েছে, সেটা আমার কাছে অতিরঞ্জিত লেগেছে। ওদের আচরণে মনে হয়েছে, ১৫ বছর ওদের দিয়ে জোর করে শোক পালন করানো হয়েছে। তাই এবার আনন্দ-ফুর্তি করেছে। এটা তো আমাদের নৈতিক শিক্ষা নয়। এতটা নিষ্ঠুর আমরা নই। যে শোক পালন করতে চায়, তাকে সেই সুযোগ দিতে হবে।
আগের সরকার জোর করে শোক পালন করিয়েছে, সেটা যেমন ভুল ছিল, এবার যারা করতে দেয়নি, তারা তো একই ভুল করল। তাহলে বাকস্বাধীনতা এলো কোথা থেকে? বাকস্বাধীনতা শুধু সরকার নয়, মানুষকেও তার পাশের জনকে দিতে হয়। আমি একটা মত প্রকাশ করব, তোমার কাছে যদি যুক্তি থাকে, তাহলে সেটা সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দাও। আমি ভুল হলে মাথানত করে মেনে নিয়ে স্যরি বলব। কিন্তু গালি দিয়ে তো হবে না।’