ক্যারিয়ার জীবনে তেমন কোন সফল মুভি না থাকলেও নায়িকার তকমা কাজে লাগিয়ে সফল হয়েছেন ব্যক্তি জীবনে। হাতে সিনেমা না থাকলেও দুহাত ভরে টাকা কামাতেন নিপুন।বছরের বেশির ভাগ সময় বিদেশ ভ্রমণ, মেয়েকে বিদেশে পড়ালেখা করানো, রাজধানীর অভিজাত এলাকায় পার্লারের ব্যবসা, দামি গাড়ি কিভাবে আসতো এত টাকা?
এছাড়াও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন নিয়ে হয়েছেন বেশ সমালোচিত। সাধারণ সম্পাদকের পদে হেরে গিয়েও ক্ষমতা দেখিয়ে বসেছেন চেয়ারে।
শিল্পী সমিতির সেই নির্বাচন নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। নির্বাচনে হেরেও নিপুণ কীভাবে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসলেন তা নিয়েও বিস্তর আলাপ হয়েছে। তবে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুললেননি। সে সময়ে চুপ থাকলেও চিত্রনায়িকা নিপুণের বিরুদ্ধে এবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন অনেকে। যাদের একজন ২০২২ সালে শিল্পী সমিতির ভোটে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা পীরজাদা হারুন।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ভোট গণনার রাতে তার ওপর দেশের ক্ষমতাবান একজন রাজনীতিবিদ চাপ প্রয়োগ করেছিলেন নিপুণকে জেতানোর জন্য।
হারুন বলেন, ‘সেদিন রাতে একের পর এক ফোনে আমাকে ভয় দেখানো হয় যে তুলে নিয়ে যাবে। পরে একটা জায়গায় যেতে বলেন, যেখানে বড় অঙ্কের টাকা রাখা ছিল। যখন রাজি হলাম না, তখন ফলাফল নিয়ে মামলা করা হলো। সেটা চলে গেল কোর্টে। তখন নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমাকে বানিয়ে দেওয়া হলো অন্য একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। নানা কাণ্ডে আমাকে ছোট করা হলো, এফডিসিতে নিষিদ্ধ করা হলো।’
দীর্ঘদিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদে দায়িত্বরত ছিলেন হারুন। নিজের এই সততার কারণে বারবার সরকারি চাকরিতে পদবঞ্চিত হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ওই নির্বাচনেই হারুনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে যুক্ত এক সদস্য বলেন, ‘নিপুণকে জয়ী করতে সেদিন রাতে ১৭ বার ফোন করেন শেখ সেলিম সাহেব। এমনকি নির্বাচন কমিশনারকেও ভয়ভীতি দেখিয়ে গালিগালাজ করেন। বলেন, পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে যাবেন।’
তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে নিপুণ না কোন নামকরা নায়িকা না কোন নামকরা ব্যবসায়ী। না কোন এমপি বা মন্ত্রী। তাহলে এতটাকা আর এত প্রভাব পেল কোথায়। এর সবের পিছনে নাকি ছিল রাজনৈতিক হাত। ছিল শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ভালোবাসা আর আশীর্বাদ।বিষয়টি অনেকেরই জানাছিল কিন্তু মুখ খোলার দুঃসাহস দেখাননি কেউ।
শেখ সেলিমের হাতের ছায়া তার মাথার উপর থাকায় নায়িকা নিপুণ হয়ে উঠেছিলেন অপ্রতিরোধ্য। অনেক সরকারি দপ্তরে তার ছিল দৌড়। যে কোন কাজ ভাগিয়ে আনতে নিপুন ছিলেন এক বিশ্বস্ততার নাম। রাজউক থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে নিপুণের বিরুদ্ধে।
নিপুণের সঙ্গে শেখ সেলিমের সখ্যতা চোখে পড়েছে একাধিকবার। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে অভিজাত এলাকা বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে নিপুণ গড়ে তোলেন প্রসাধনী ও লাইফ-স্টাইল কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান ‘টিউলিপ নেইলস অ্যান্ড স্পা’। সাধারণত শেখ সেলিমের মতো নেতা পার্লার উদ্বোধন করার কথা না হলেও নিপুণের এই পার্লারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন তিনি।