কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালী জেলার বানের পানির স্রোতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার লক্ষাধিক বাসিন্দা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। দেখা দিয়েছে খাবার ও পানীয় জলের তীব্র সংকট।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কচুয়া উপজেলার আশরাফুর ইউনিয়নের ভবানিপুর, সানন্দকড়া, রসুলপুর, পিপলকরা ও শাহারাস্তি উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের উনকিলা, রায়শ্রী, দাদিয়াপাড়া ও দক্ষিণ পাড়ার ঘুরে দেখা গেছে বহু ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে আছে।
এসব এলাকায় দুর্গত লোকদের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিছু সহায়তা দিলেও রান্নাবান্না করে খাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। শুরুতে পানিবন্দি লোকজন কিছু শুকনো খাবার পেলেও এখন চলছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
পিপলকরা গ্রামের দুলাল মিয়া বলেন, গত ১০ দিন ধরে আমাদের গ্রামের বহু বাড়িঘর পানির নিচে। গোয়ালঘর, টয়লেট ও রান্নাঘরগুলোতে পানি উঠে যাওয়ায় চরম সংকটের মধ্যে রয়েছেন। কেউ কেউ উঁচু জায়গায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উঠলেও অনেকেই এখন পর্যন্ত পানির সঙ্গেই বসবাস করছেন।
রাজশ্রী গ্রামের আনামিয়া বলেন, আমার বসতঘরটি গত এক সপ্তাহ পানির নিচে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় নিলেও গবাদি পশু নিয়ে খুব বিপাকে আছি। এখন পর্যন্ত আমাদের এলাকায় কোনও ধরনের সহায়তা আসেনি।
স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আশিকুর রহমান বলেন, আমাদের এলাকার কিছু লোক সহযোগিতা নিয়ে এসেছে। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় লোকদের সহযোগিতার চেষ্টা করছি। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে এসব লোকদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা উচিত।
শাহারাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াসির আরাফাত জানান, বানের পানিতে এখন পর্যন্ত পানিবন্দি আছে ৫৫ হাজারের অধিক মানুষ। সাড়ে তিন হাজার লোক আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনও তাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এহসান মুরাদ জানান, পানিবন্দি এলাকায় ইতিমধ্যে কিছু লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।