বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৫৩তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন তিনি। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাঁকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধি দেওয়া হয়।
নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা (বর্তমান নাম নূর মোহাম্মদনগর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের কর্মময় জীবন থেকে জানা যায়, ১৯৫৯ সালের ১৪ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন নূর মোহাম্মদ শেখ, যা বর্তমানে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করার পর ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন তিনি। পরবর্তীকালে তিনি ল্যান্স নায়েক হিসেবে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন তিনি।
মহিষখোলার নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ নূর মোহাম্মদ নগর করা হয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল (অব:) আবু ওসমান চৌধুরী নূর মোহাম্মদ নগরের উদ্বোধন করেন।
এরপর উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যায় নূর মোহাম্মদ নগর। তার স্মৃতি রক্ষার্থে নূর মোহাম্মদ নগরে নির্মাণ করা হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’, স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্কুল ও কলেজ। এছাড়া নড়াইল শহরে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়।
২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর নূর মোহাম্মদ শেখের স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা (৮০) বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। নূর মোহাম্মদের তিন মেয়ে ও এক ছেলে নড়াইল এবং যশোর শহরে বসবাস করেন।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নূর মোহাম্মদ নগরে কোরআনখানি, শোভাযাত্রা, স্মৃতিসৌধে গার্ড অব অনার ও পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।