ভারতের মণিপুর রাজ্যে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও সহিংসতা উস্কে দিতে পারে এমন আশঙ্কায় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভারতের মণিপুরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয় রাজ্য সরকার। তবে বন্ধ করে দেওয়ার তিন দিন পর পাঁচ উপত্যকা জেলায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পুনরায় চালু হয়েছে। তবে মোবাইল ডেটা এখনও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেস্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এনই। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সচল হওয়া পাঁচটি উপত্যকা জেলা হলো ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, থৌবল, বিষ্ণুপুর এবং কাকচিং।
কথিত “ড্রোন হামলা” এবং পরবর্তীতে এই অঞ্চলে বিক্ষোভ নিয়ে ভুল তথ্য সম্বলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিস্তার রোধ করার জন্য প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেটের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। মূলত পাঁচ দিনের জন্য নির্ধারিত এই নিষেধাজ্ঞাটি এখন আংশিকভাবে শিথিল করা হয়েছে। তবে মোবাইল ডেটা পরিষেবাগুলো এখনও স্থগিত রয়েছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘মণিপুর রাজ্যের আঞ্চলিক অধিক্ষেত্রে ১০ সেপ্টেম্বর বিকাল থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ৩ বিকাল ৩ টা পর্যন্ত পাঁচ দিনের জন্য লিজ লাইন, ভিএসএটি, ব্রডব্যান্ড এবং ভিপিএন পরিষেবা সহ ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডেটা পরিষেবাগুলোর ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।’
মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু মেইতি সম্প্রদায় ও খ্রিষ্টান কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কদিন পরপরই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে বিগত কয়েক মাস কিছুটা শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করলেও গত সপ্তাহে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে।
নতুন সংঘাতে অন্তত ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীরা গত সপ্তাহে প্রাণঘাতী অস্ত্র এবং ড্রোন হামলার জন্য অভিযুক্ত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
এদিকে মণিপুরে চলমান জাতিগত সংঘাত মোকাবিলায় দেশটির কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর (সিআরপিএফ) সদস্যদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। মণিপুর থেকে আসাম রাইফেলসের দু’টি ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার কয়েকদিন পর দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার সহিংসতায় বিধ্বস্ত রাজ্যটিতে সিআরপিএফের ২ হাজার সদস্যের দু’টি ব্যাটালিয়ন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়।
এছাড়া ভারতীয় দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিআরপিএফের নতুন এই দুটি ইউনিটের সব কোম্পানিকে মণিপুরের বিভিন্ন অংশে ঘাঁটি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। প্রত্যেক ইউনিটে পাঁচ থেকে ছয়টি কোম্পানি রয়েছে। দু’টি ব্যাটালিয়নে সিআরপিএফের প্রায় ২ হাজার জওয়ান ও কর্মকর্তা রয়েছেন।