সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুমোদনহীন বৈদেশিক মুদ্রা নিজ হেফাজতে রাখার অভিযোগে করা কোতোয়ালি থানার মামলায় রিমান্ডে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আরিফুর রহমান এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটি হয়েছে কোতোয়ালি থানায়। আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আজ সকালে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। অপর দিকে তাঁদের আইনজীবীরা রিমান্ড নামঞ্জুরের আরজি জানিয়ে জামিনের আবেদন করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত দুজনের প্রত্যেককে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।গত ১৩ আগস্ট আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে রাজধানীর সদরঘাট থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, আনিসুল হকের কাছ থেকে উদ্ধার করা ব্যাগে ১৭ হাজার ৫৯২ মার্কিন ডলার, ৭২৬ সিঙ্গাপুরি ডলার পায় পুলিশ। আর সালমান এফ রহমানের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১২ হাজার ৬২৪ মার্কিন ডলার, ৬২০ ফরাসি মুদ্রা, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাড়ে ৮ হাজার মুদ্রা, ১১ হাজার ৬৫০ সৌদি রিয়াল, ৭৭৯ সিঙ্গাপুরি ডলার, ১৫০ পাউন্ড, ১ হাজার ৩৩২ ইউরো ও ৫০ হাজার টাকা। বৈদেশিক মুদ্রার বিষয়ে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে বললে আসামিরা তা দেখাতে পারেননি।
এ ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। এ মামলায় আজ তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হলো।
আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে প্রথমে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। প্রথম দফায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে তাঁদের গত ২৪ আগস্ট আদালতে তোলা হয়। সেদিন লালবাগ ও নিউমার্কেট থানার ২টি মামলায় তাঁদের ৫ দিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে বাড্ডা থানার একটি হত্যা মামলায় তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। আজ বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হলো।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গত ১৩ আগস্ট রাতে সদরঘাট থেকে নৌপথে পালানোর সময় আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদেরকে গত ১৪ আগস্ট নিউ মার্কেট থানায় দায়ের করা হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দশ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর ২৪ আগস্ট লালবাগ থানায় দায়ের করা শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। একই দিনে নিউ মার্কেট থানায় দায়ের করা সবুজ আলী হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২৯ আগস্ট বাড্ডা থানায় দায়ের করা সুমন সিকদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আবারও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রত্যেককে আরও তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।