‘শেষবেলায়’ টেলি-নাটকের পরিচালনা দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ চয়নিকা চৌধুরীর। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ছোট পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় কাহিনীকারও তিনি। এবার পরিচালনার ২৪ বছরে পা দিলেন তিনি। শিগগিরিই শুরু করবেন চতুর্থ সিনেমা ‘সখা সোলমেট’-এর শুটিং।
আনন্দবাজার অনলাইনের এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী বলেছেন, একদিনের জন্য তিনি পরিচালনায় বিরতি নেননি। ২৪ বছরের পরিচালনার পর ঝুলিতে ৪০০-রও বেশি নাটক, তিনটি ছায়াছবি করেছেন। তিনি বলেন, শিগগিরই শুরু করবেন চতুর্থ ছবি ‘সখা সোলমেট’-এর শুটিং। পরিচালক বলেন, বুধবার সকাল থেকেই তিনি স্মৃতিমেদুর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতীত বিহার করেছেন। প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে?
তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা পঙক্তি আজ খুব মনে পড়ছে। কবিগুরু লিখেছিলেন—মনে রে আজ কহো যে/ ভাল-মন্দ যাহাই আসুক/ সত্যেরে লও সহজে’। সেই অনুভূতি থেকে বলতে পারি, আমি ভাগ্যবান। দুটো যুগের সাক্ষী আমি। নতুন-পুরোনো সময়ের সব ভালো গ্রহণ করতে পেরেছি।
তাঁর মতে, “আমার সময়ে ‘নয়নমণি’, ‘ডুমুরের ফুল’, ‘বসুন্ধরা’-র জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ছিল। এখন ‘তুফান’, ‘রাজকুমার’ দেখছি। আমার কিন্তু খারাপ লাগছে না। কারণ, আমরা এখন হইচই, নেটফ্লিক্স, হটস্টারের মতো ওয়েব প্ল্যাটফর্ম দেখি। ফলে, বাংলাদেশের ছবির গতিও আগের তুলনায় এখন অনেক দ্রুত।” পরিচালকের জায়গা থেকে তিনি মনে করেন, সব ছবিতে বার্তা থাকতেই হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু, গল্প না থাকলে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে যাবেন না। একই ভাবে তিনি ভারতের ছবিও দেখেন। শাহরুখ খানের ‘কভি খুশি কভি গম’ তাঁর প্রিয়। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘অর্ধাঙ্গিনী’ তাঁকে কাঁদিয়েছে।
সেই সূত্র ধরে তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, টলিউডে এসে বাংলা ছবি পরিচালনা করবেন না? করলে নায়ক-নায়িকা হবেন কে?
চয়নিকা উচ্ছ্বসিত দেবকে নিয়ে। তাঁর কথায়, “টলিউডে আমার পছন্দের একগুচ্ছ মানুষ আছেন। সব সময়ের প্রিয় উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেনের ছবি। ভাল লাগে অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, রেখা, কাজল, মাধুরী দীক্ষিতকে। কিন্তু, দেবকে কী যে ভাল লাগে! ওঁর মধ্যে নায়কের সমস্ত গুণ রয়েছে। খুব আপন মনে হয় ওঁকে। দেবকে নিয়ে একটা প্রেমের ছবি বানানোর স্বপ্ন দেখি। লোকে বলে, আমি নাকি প্রেমের গল্প খুব ভাল বানাতে পারি।” তিনি এর আগে টলিউডে যৌথ পরিচালনার ডাক পেয়েছিলেন। তখন ব্যস্ততার কারণে সাড়া দিতে পারেননি। এ বার তিনি একা একটি ছবি পরিচালনা করতে চান। দেবের বিপরীতে বেছে নিতে পারেন তাঁর দুই ‘মানসকন্যা’ পরীমণি কিংবা বুবলীকে। তাঁর কথায়, “আমার প্রথম মেয়ে যেমন দেখতে, তেমনই মিষ্টি স্বভাবের। দ্বিতীয় জন দুর্দান্ত পেশাদার।”
দীর্ঘ পথ পেরিয়ে চয়নিকা বুঝতে শিখেছেন, কিছু মানুষ চলার পথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে। কিন্তু, কাজ কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করে না। আজীবন সঙ্গে থেকে যায়। দীর্ঘদিন থেকে যায় মানুষের অন্তরে