আজ ২ অক্টোবর বিশ্ব পথশিশু দিবস। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। মায়ের কোল হলো তাদের নিরাপদ আশ্রয়।পথশিশু অর্থাৎ ছিন্নমূল শিশু-কিশোরদের পুনর্বাসন তথা তাদের জীবনমান উন্নত করার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষে দিবসটি পালিত হয়।
দেশের পথশিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিবছর ২ অক্টোবর দেশে পালিত হয় পথশিশু দিবস। আজ বুধবার (২ অক্টোবর) জাতীয় পথশিশু দিবস।
পথশিশু শব্দটি সেই সব শিশুদের প্রকাশ করে, যাদের কাছে রাস্তাই (বিস্তৃত অর্থে বস্তি, পতিত জমি ইত্যাদিও এর অন্তর্ভুক্ত) তাদের স্বাভাবিক বাসস্থান অথবা জীবিকা নির্বাহের উৎস হয়ে উঠেছে এবং তারা দায়িত্বশীল কোনো প্রাপ্তবয়স্ক কর্তৃক সুরক্ষিত, পথ নির্দেশনা প্রাপ্ত ও পরিচালিত নয়। পথশিশুরা স্কুলে যায় না। রাস্তাঘাটে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে বা অন্য কাজ করে তারা। এর কারণ তাদের বাবা-মা কাজ করতে অক্ষম বা তাদের উপার্জন অতি সামান্য, যা তাদের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য যথেষ্ট নয়।
ধারণা করা হয় যে, বাংলাদেশে ৬,০০,০০০-এর বেশি পথশিশু বসবাস করছে এবং এদের ৭৫%-ই রাজধানী ঢাকায় বসবাস করে। মানব উন্নয়ন সূচকে ১৩৮তম স্থানে থাকা একটি দেশ, যেখানে জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে সেখানে এই শিশুরা সামাজিক স্তরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরের প্রতিনিধিত্ব করে। দেশের জনসংখ্যা এখন বেড়েছে, আর রাস্তার শিশুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৪০,০০,০০০ জনে।
তবে আশঙ্কাজনক হারে বাংলাদেশে বেড়ে চলেছে পথশিশুর সংখ্যা। এদের বেশির ভাগই অপুষ্টি, যৌনরোগ ও মাদকের নেশায় আক্রান্ত। মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পথশিশু। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য মতে, পথশিশুদের ৮৫ ভাগই কোনো না কোনোভাবে মাদক সেবন করে। এর মধ্যে ১৯ শতাংশ হেরোইন, ৪৪ শতাংশ ধূমপান, ২৮ শতাংশ বিভিন্ন ট্যাবলেট ও আট শতাংশ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নেশা করে থাকে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মতে, ঢাকা বিভাগে মাদকাসক্ত শিশুর প্রায় ৩০ শতাংশ ছেলে এবং ১৭ শতাংশ মেয়ে। মাদকাসক্ত ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ছেলে এবং মেয়ে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।