জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ক্রেডিট কোনো দলের নয়, এর ক্রেডিট শুধু ছাত্র-জনতার। ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন মেধাবী সেনা অফিসারের ত্যাগ দিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ৫ আগস্ট হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কুশিয়ারা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশে যে সাময়িক পরিবর্তন এসেছে, তাকে স্থায়ী রূপ দিতে সৎলোকের শাসন ও আল্লাহর আইন প্রয়োজন। যেখানে দল-মতের ঊর্ধ্বে সব নাগরিক সমান অধিকার ভোগ করবে। আমরা কাজের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রকৃত ভালোবাসা অর্জন করতে চাই।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু ভেদাভেদ চাই না। এমন সমাজ তৈরি করতে হবে যেখানে মসজিদের মতো মন্দিরেও পাহারার প্রয়োজন হবে না।’
কেউ সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইলে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের রুখে দিতে আহ্বান জানান জামায়াত আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডবে মানুষ হত্যার উল্লাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল। সেই বাংলাদেশ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আবার পথে ফিরেছে। আমাদের ছাত্র ও যুবসমাজ সেই অসাধ্য সাধন করেছে। যে জাতির দেড় বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধরা রাজপথে নামতে পারেন সেই জাতিকে আর দমিয়ে রাখা যাবে না।’
শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি মজলুমের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারা আমাদের শীর্ষ নেতাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসি দিয়ে শহীদ করেছে। আজ তারা ইতিহাসের মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।’
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরীর আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে মহানগরীর কয়েক হাজার কর্মীর সমাগম হয়।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা উত্তরের আমির হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান ও জেলা দক্ষিণের আমির অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান।