ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর নতুন রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার জানিয়েছে, বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম সমর্থন করার জন্য তারা প্রস্তুত। সাম্প্রতিক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানকে পরিবর্তনের অভূতপূর্ব সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে, রাষ্ট্রদূত মানবাধিকার ও সুশাসনের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াসহ এই পরিবর্তন ও সংস্কারে ইইউ’র সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কে বৈচিত্র্য আনতে এবং এলডিসি থেকে উত্তরণে ইইউ বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বলে উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইইউর সহায়তার প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশ-ইইউ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারে একটি উত্তম ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির আশ্বাস দেন।
তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যকার সম্পর্ককে প্রাণবন্ত ও গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উন্নতির ওপর বিশেষ জোর দিয়ে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ইইউর সহায়তার অনুরোধ জানান। তিনি বাংলাদেশের কিছু নাগরিকের বিদেশে পাচার করা সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
ইইউ রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে রেল, জ্বালানি, পানি ও স্বাস্থ্য খাতে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (ইআইবি) চলমান ৯০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশে ইআইবির বিনিয়োগ পোর্টফোলিও বাড়ানোর প্রস্তুতির কথাও ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা ও ইইউ রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে ‘অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি’র ওপর আসন্ন আলোচনার প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য জন্য ইইউ’র অব্যাহত সহায়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য ইইউর অব্যাহত সহায়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। অধিকার ও নিরাপত্তাসহ রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনই দীর্ঘায়িত সংকটের একমাত্র টেকসই সমাধান বলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং ইইউ রাষ্ট্রদূত একমত হন।