সত্যি হতে চলেছে আশঙ্কা। বঙ্গোসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূল পরিস্থিতি! আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আন্দামান সাগরে যে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, তা আগামী বুধবার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এসে ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে। ইতোমধ্যে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় পরিণত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নামটি কাতারের দেওয়া। আরবি ভাষায় এই শব্দের অর্থ ‘সুন্দর এবং মূল্যবান মুক্তো’। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার ৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৬.২০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০.০০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় পরিণত হয়েছে। এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯৫ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৬২০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯৫ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৪৫ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিমি এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিমি, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। যে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার জন্য বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় উইন্ডিডটকম থেকে আজ বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ এখন যে অবস্থায় আছে সেভাবে থাকলে তা বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর উপকূলে পৌঁছবে। এটি মূলত ভারতে ওপরে আছড়ে পড়তে পারে। তবে বাংলাদেশের উপকূলে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে।
ভারতের আলিপুর আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে শুক্রবার ভোর ৫টার মধ্যে পুরী ও সাগরদ্বীপের মাঝে ধামরা বন্দরে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়টি। সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর বলছে, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রূপেই স্থলভাগে ঝাপটা দেবে ‘দানা’। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার থেকে ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ফলে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের।
দিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ বুধবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয় যেতে পারে।