Top Newsজাতীয়

সম্প্রীতির একটি দেশ গড়ে তুলতে চাই: সেনাপ্রধান

মোহনা অনলাইন

সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ মিলে একটি সুন্দর দেশ গড়ার আশা প্রকাশ করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এখানে সুন্দরভাবে শান্তিতে বসবাস করতে, দেশ ও জাতির উন্নতি করতে চাই।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে পবিত্র কঠিন চীবর দান উৎসব ও জাতীয় বৌদ্ধধর্মীয় মহাসম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেনাপ্রধান এ কথা বলেন।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, বৌদ্ধধর্মের মূলমন্ত্র শান্তি ও সম্প্রীতি। হাজার হাজার বছর ধরে আমরা এখানে আছি, এটাই আমাদের ঐতিহ্য। সনাতন, বৌদ্ধ, খ্রিষ্ট ও ইসলাম– প্রধান চার ধর্মের মানুষ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে চাই। একে অপরকে সাহায্য করব, সহমর্মিতা প্রদর্শন করব। কারও কোনো অসুবিধা, কেউ বিপদে পড়লে সাহায্য করব। এভাবেই একটা সম্প্রীতির একটি দেশ গড়ে তুলতে চাই। সবাই মিলে ভালো থাকতে চাই।

তিনি বলেন, ‘যখন আজান হচ্ছিল, তখন তাঁরাই বললেন যে কিছুক্ষণ পরে শুরু করি, আজানটা শেষ হয়ে যাক। এই যে ধর্মীয় বোঝাপড়া (আন্ডারস্ট্যান্ডিং), ধর্মীয় সম্প্রীতি, মমত্ববোধ দেখিয়েছেন, এটা অতুলনীয়।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার দেখে ভালো লাগছে। বিশেষ করে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে দেখে। তারা এ দেশে অনেক বৌদ্ধমন্দির তৈরিতে আর্থিক সহায়তা করেছেন। বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীদের জন্য এটা চমৎকার অবদান। এখানে ভিয়েতনাম ও অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার আছেন। তারাও বাংলাদেশে শান্তি-সম্প্রীতির জন্য অবদান রাখছেন।

সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বৌদ্ধধর্মের অনুসারীরা উৎসব পালনে সেখানে সমবেত হয়েছেন জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই, এভাবেই প্রতিনিয়ত, প্রতি সময় আপনারা আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো পালন করবেন। সুখে-শান্তিতে থাকবেন। এ জন্য যা কিছু করতে হয়, আমরা সেটা করব। এর আগে দুর্গাপূজাতেও আমরা নিরাপত্তা দিয়েছি। খুব সুন্দরভাবে তা উদ্‌যাপন করা হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনারা যখনই যে ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা চাইবেন, আমরা সেটা প্রদান করব।’

বৌদ্ধধর্মের মূলমন্ত্র শান্তি ও সম্প্রীতি উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘হাজার হাজার বছর ধরে আমরা এখানে আছি, এটাই আমাদের ঐতিহ্য। সবচেয়ে পুরোনো ধর্ম হচ্ছে সনাতন ধর্ম, তারপরে বৌদ্ধধর্মের আবির্ভাব হয় আড়াই হাজার বছর পূর্বে, পরবর্তীতে খ্রিষ্টধর্ম আসে এবং ইসলাম সবচেয়ে শেষে আমাদের দেশে আসে। এই প্রধানতম চার ধর্ম, আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে চাই। একে অপরকে সাহায্য করব, সহমর্মিতা প্রদর্শন করব; কারও কোনো অসুবিধা হলে, বিপদে পড়লে সাহায্য করব। এভাবে একটা সম্প্রীতির একটি দেশ গড়ে তুলতে চাই। সবাই মিলে ভালো থাকতে, সুখে-শান্তিতে থাকতে চাই।’

সেনাপ্রধান নিজেও পার্বত্য জেলায় দায়িত্ব পালন করে এসেছেন জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমার মমত্ববোধ-ভালোবাসা আছে। পার্বত্য জেলার শান্তির জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমাকে যদি বলা হয়, আমি সেটা করব। পার্বত্য জেলায় পাহাড়ি-বাঙালি, সবাই যেন সুন্দরভাবে বাস করতে পারি, সেই চেষ্টা আমার জারি থাকবে।’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘আপনাদের (পাহাড়ি জনগোষ্ঠী) একটা ভাষা–সংস্কৃতি আছে। আমরা এটাকে সম্মান করতে চাই। সংস্কৃতি, ভাষা ও জীবন–বৈচিত্র্য, এটাকে আমরা রক্ষা করতে চাই। এটা আমাদের বিশাল বড় সম্পদ। এগুলোকে সংরক্ষণ করার জন্য যা কিছু করতে হয়, আমরা করব।’

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button