দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসে থাকার অধিকার নেই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর। শনিবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে নাগরিক ফোরাম আয়োজিত ‘সংবিধান অনুলিখন না সংশোধন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, যেদিন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছেন সেই দিনই সংবিধান নষ্ট হয়ে গেছে। একজন রাষ্ট্রপতি যখন বলে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন, আবার পরবর্তীকালে তিনি বলেন, পদত্যাগপত্র তার কাছে নেই বা তিনি পাননি। যিনি এত বড় মিথ্যা কথা বলতে পারেন, তাহলে তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন এবং তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। ওই চেয়ারে তার থাকার আর কোনও বৈধতা নেই।
তিনি বলেন, এই সংবিধান একটি পরিবারের পক্ষের দলিল। এই সংবিধান শুধুমাত্র একটি পরিবারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই সংবিধানে বলা হয়েছে— এই সংবিধান অপরিবর্তনীয়। এই সংবিধানে বলা হয়েছে— প্রধানমন্ত্রী সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। তার মানে বাংলাদেশে তার পিতা শেখ মুজিব যেমন ৭২ সালে বাকশাল কায়েম করেছিলেন, তেমনই তার কন্যাও এই সংবিধান অনুযায়ী অঘোষিত বাকশাল কায়েম করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এই সংবিধানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্সিয়াল করা হয়েছিল আবার হয়ে গেলো পার্লামেন্টারি সংবিধান, যা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ভয়ানক ফ্যাসিস্ট সরকার গঠন করে দীর্ঘদিন বাংলাদেশে রাজত্ব কায়েম করেছেন। বাংলাদেশে এখন প্রেসিডেন্সিয়াল সরকারের ফিরে যাওয়ার সময় এসেছে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, এখন বাংলাদেশে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করতে হবে, এটি রাজনৈতিক দলে নেতারা মানবেন কিনা সেটা জানি না। জিয়াউর রহমান বলেছিলেন— সংবিধানে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস এবং আস্থা এবং ধর্মীয় বিশ্বাস সংবিধানে থাকতে হবে। সেটা যদি না থাকে তাহলে কিসের সংবিধান।
বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ মানুষ মুসলিম, আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস যদি না থাকে, সেই সংবিধান আমাদের নয়। অনন্তকাল প্রধানমন্ত্রী একজন ব্যক্তি থাকবেন এটি বাদ দিতে হবে।
সাবেক বিচারপতি এএফএম আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ও জেলা জজ ইফতেদার আহমেদ প্রমুখ।