অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশে নির্বাচন দেওয়ার আগে অবশ্যই সংস্কার করা প্রয়োজন। কয়েকটি রাজনৈতিক দল চাইছে দ্রুত সময়ে নির্বাচন হোক। আবার কেউ চাইছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া নির্বাচনী কাঠামো ঠিক করে এরপর নির্বাচন আয়োজন করা হোক।
বুধবার (১৩ নবেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ কথা বলেন তিনি। কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে বর্তমানে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অবস্থান করছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সম্মেলনের ফাঁকে এএফপিকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, “সংস্কারের গতি নির্ধারণ করবে কত দ্রুত সময়ে নির্বাচন হবে।” শেখ হাসিনার পতনের পর ক্ষমতা নিয়ে তিনি কথা দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক দেশের দিকে নিয়ে যাবেন। আর সেই কথা তিনি রাখবেন। ড. ইউনূস বলেন, “এটি একটি ওয়াদা, আমরা এই ওয়াদা করেছিলাম যে যত দ্রুত নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুত হব, আমরা নির্বাচন দেব। যেন নির্বাচিতরা ক্ষমতা নিতে এবং দেশ চালাতে পারে।”
তিনি জানিয়েছেন, সংবিধান, সরকারের গঠন, সংসদ এবং নির্বাচনী আইনে যেসব প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা হবে সেগুলোতে সবার দ্রুত সময়ের মধ্যে একমত হতে হবে। যেন তারা দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন। ড. ইউনূস বলেন, “আমরা হলাম অন্তর্বর্তী সরকার। তাই আমাদের মেয়াদ যত কম হওয়া সম্ভব তত কম হওয়া উচিত।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার, সংসদ এবং নির্বাচনী বিধিমালার পাশাপাশি সম্ভাব্য সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়ে আমাদের দ্রুত একমত হতে হবে।
বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিতিশীলতার বিষয়ে তিনি বলেন, যে কোনো সরকারই স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকবে। আমরাও উদ্বিগ্ন। আমরা আশা করছি আমরা এটি সমাধান করতে পারব এবং একটি শান্তিপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা রাখতে পারব। বিপ্লবের তো মাত্র তিন মাসই পার হলো।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন সংস্কারকাজে হাত দিয়েছে। বিএনপিসহ বেশ কিছু দল যতটুকু সম্ভব সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।