ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা পোপ ফ্রান্সিস এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতালির রোমে যৌথভাবে ‘পোপ ফ্রান্সিস ৩ জিরোস ক্লাব’ নামে ক্লাব করার উদ্যোগ নিয়েছেন। আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস উইং এসব তথ্য জানিয়েছে।
‘থ্রি জিরো ক্লাব’ রোমের প্রান্তিক যুবকদের জন্য আশার বাতিঘর হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এটি তাদের উদ্ভাবনী ধারণা বিকাশ এবং দৃঢ় ও টেকসই সমাধান সৃষ্টির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
রোমের ভিকার জেনারেল কার্ডিনাল বাল্ডো রেইনার কাছে এক চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তিনি এই পদক্ষেপে ‘গভীরভাবে সম্মানিত’ বোধ করছেন। তিনি এ উপলক্ষে কার্ডিনাল রেইনাকে ‘আন্তরিক অভিনন্দন’ জানান।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই অসাধারণ উদ্যোগটি মহামান্য পোপ ফ্রান্সিসের দৃষ্টিভঙ্গি এবং রূপান্তরমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য আমার আকাঙ্ক্ষাকে অঙ্গীভূত করেছে।’
চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা লেখেন, ‘এই উদ্যোগটি শুধু শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণ অর্জনের লক্ষ্যে নয়, বরং এটি সহানুভূতি, ন্যায়বিচার ও স্থায়িত্বের ভিত্তিতে একটি নতুন সভ্যতার উত্থানের আকাঙ্ক্ষাও উৎসাহিত করে।’
‘একটি সভ্যতা যেখানে কাউকেই পিছিয়ে রাখা উচিত নয়, যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি তাদের ভাগ্য গড়ার নায়ক হতে পারে, মানব পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হতে পেরে গর্বিত হতে পারে, যেমনটি হলি ফাদার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জোর দিয়েছেন’, যোগ করেন ড. ইউনূস।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি পোপ ফ্রান্সিসের অবিচল প্রতিশ্রুতি ও সামাজিক ব্যবসার শক্তিতে আমার বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত হয়ে থ্রি জিরো ক্লাব তরুণ মনকে এমন প্রকল্পগুলো কল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে উৎসাহিত করে, যা অর্থপূর্ণ পরিবর্তনের দিকে চালিত করে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের (তরুণদের) সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা মনোভাবকে পরিচর্যা করে, আমরা এই তরুণ নেতাদের আরও ন্যায্য ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজের নির্মাতা হওয়ার জন্য ক্ষমতায়ন করি।’
পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি ‘গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা’ জানিয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সবাইকে একসঙ্গে এই রূপান্তরমূলক যাত্রা শুরু করতে আহ্বান জানান, যেন পরবর্তী প্রজন্ম এমন একটি সভ্যতা গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত হয়, যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি মর্যাদা পাবে এবং এই গ্রহের পবিত্রতা রক্ষা পাবে।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, সারা বিশ্বে কমপক্ষে চার হাজার ৬০০টি থ্রি জিরো ক্লাব রয়েছে, যার সবগুলোই একটি নতুন সভ্যতার জন্য অধ্যাপক ইউনূসের দৃষ্টিভঙ্গিতে অনুপ্রাণিত। এর মধ্যে অনেক ক্লাব বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।