সাবেক সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বর্তমানে কারাগারে আছেন। তিনি কারাগারে নিয়মিত নামাজ আদায় শুরু করেছেন। রোববার ব্যারিস্টার সুমনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে যান তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও চেম্বার পার্টনার এম লিটন আহমেদ।
আইনজীবী লিটন আহমেদ জানান, অনেক বদলে গেছেন ব্যারিস্টার সুমন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছেন। কারাগারে ঘুম থেকে ওঠেন ফজরের আজানের আগেই।
লিটন আহমেদ বলেন, ব্যারিস্টার সুমনের জেল সঙ্গী হলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। তাদের দুজনের সঙ্গে একই রুমে থাকেন ব্যারিস্টার সুমন। তাদের সঙ্গে সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
লিটন আহমেদ জানান, জেলে ডিভিশন পেয়েছেন ব্যারিস্টার সুমন। তবুও তিনি কষ্টে আছেন তার সঙ্গে মোবাইল ফোন না থাকায়। কারণ আগে সার্বক্ষণিক মোবাইলে নিজের একাউন্টে যেতেন এখন যেটি পুরোপুরিই বন্ধ।
আইনজীবী লিটন আহমেদ বলেন, কারাগারে সুমনকে দুটি জাতীয় পত্রিকা দেওয়া হয়, যার খুঁটিনাটি পড়ে দিন কাটান তিনি।তবে ব্যারিস্টার সুমন তার সহকর্মীকে লিটনকে জানান, যেদিন আদালতে তোলা হয় সেদিন মন খারাপ থাকে। কারণ তার হাতে হাতকড়া পড়িয়ে কোর্টে নেওয়া হয়, সেখানে অন্য সহকর্মীদের দেখে আবেগী হয়ে পড়েন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন তার চেম্বার পার্টনার লিটনকে আরও জানান, জেল জীবন কষ্টের কারণ সন্ধ্যা নামার মুখেই কারা সেলে ঢুকতে হয়, খাবার খেতে হয়। এটা স্বাভাবিক জীবনে মানা কষ্টের। বাইরের খাবার তেমন একটা পান না।
এম লিটন আহমেদ আরও জানান, কারাগারে থেকে পরিবারকে অনেক মিস করেন ব্যারিস্টার সুমন। কারণ সপ্তাহে মাত্র একবার পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। তৎকালীন এই প্রধানমন্ত্রীর পতনের পর তার সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপির অনেকেরই দেশ ছাড়ার খবর বেরিয়েছিল। এর মধ্যে ব্যারিস্টার সুমনের নামও ছিল।
কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার পতনের প্রায় আড়াই মাস পর ২১ অক্টোবর গভীর রাতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সেই মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয় তাকে। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলা হয়েছে।