‘জয় বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানির জন্য আগামীকাল (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ শুনানির জন্য এমন সময় নির্ধারণ করেন।
আদালতে বিষয়টি শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। তখন আপিল বিভাগ বলেন, এ বিষয়টা আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।
এ বিষয়ে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, এ মামলাটি আজ শুনানির জন্য টপে থাকার কথা ছিল। কিন্তু তা আসেনি। সেজন্য এটি দ্রুত শুনানির আবেদন করছি। আগামী বুধ অথবা বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শুনানির অনুরোধ করছি। আপিল বিভাগ বলেছেন, চলতি সপ্তাহেই শুনানি হয়ে যাবে।
এর আগে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয় বলে গত ২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা যায়।
সম্প্রতি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যে আবেদনে হাই কোর্টের রায় স্থগিতেরও আবেদন রয়েছে।
২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর আদেশের পরে রিটকারী আইনজীবী বশির আহমেদ বলেছিলেন, জয় বাংলা হচ্ছে আমাদের জাতীয় প্রেরণার প্রতীক। পৃথিবীর ৬০টি দেশে জাতীয় স্লোগান আছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য যে আমরা আমাদের চেতনার সেই ‘জয় বাংলা’কে স্বাধীনতার এতদিন পরেও জাতীয় স্লোগান হিসেবে পাই নাই।
তিনি বলেন, জয় বাংলা কোনো দলের স্লোগান নয়, কোনো ব্যক্তির স্লোগান নয়, এটা হচ্ছে আমাদের ন্যাশনাল ইউনিটি। এই স্লোগান দিয়ে একদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
২০২০ সালের ১০ মার্চ জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। বাংলায় দেওয়া রায়ের আদেশের অংশে আদালত বলেন, ‘আমরা ঘোষণা করছি যে জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।’
‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদের করা রিটের শুনানি শেষে এই রায় দেন হাইকোর্ট।
পরে ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা।