উচ্চ আদালতের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করেছেন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। গত ১৬ অক্টোবর দুর্নীতি ও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ ওঠায় ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
তাদের হাইকোর্টের বেঞ্চে বিচারকাজ পরিচালনার দায়িত্ব বিরত রাখা হয়। তদন্ত শেষ হওয়া বিচারপতিদের তথ্যাবলি ও তাদের নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
১২ বিচারপতি হলেন— বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি আতাউর রহমান খান, বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিন, বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামান, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম, বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।
নিয়মানুযায়ী, রাষ্ট্রপতি এখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবেন। এর আগে ৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আরেক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে অসদাচরণ অভিযোগ সংক্রান্ত প্রাথমিক তদন্ত করছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এবং এ তদন্তের অগ্রগতি হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গত ১৬ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অবস্থান ও বিক্ষোভের সময় পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর বিচারকদের পদত্যাগের দাবি তোলা হয়। ওইদিন হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারককে বেঞ্চ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এই বিচারকেরা এখন বিচারকাজের বাইরে এবং ছুটিতে আছেন।
তারা হলেন- বিচারপতি আতাউর রহমান খান, বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিন, বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন।
প্রসঙ্গত, পাঁচ বছরের বেশি সময় আগে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠা তিন বিচারক গত ১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। তারা হলেন- সালমা মাসুদ চৌধুরী, কাজী রেজা-উল হক এবং এ কে এম জহিরুল হক।
উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার। পরে এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদনের রায় ২০১৬ সালের ৫ মে। হাইকোর্টের রায়ে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই বছরের ৩ জুলাই হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে রায় দেয় আপিল বিভাগ। পরে আপিল বিভাগের এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগ রিভিউ নিষ্পত্তি করে রায় দিলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল হয়।



