দেশের প্রশাসনিক কেন্দ্র সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ, চাঞ্চল্য আর কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে। সরকারের উচ্চমহলে বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের কথা বলছেন, অন্যদিকে হিসাব-নিকাশ হচ্ছে এই ঘটনায় কতটা ক্ষতি হলো। পাশাপাশি এই ঘটনায় কতটা স্পর্শকাতর নথি পুড়েছে, পরিকল্পিত কোনো ঘটনা কীনা, এসব নিয়ে চলছে জোর জল্পনা-কল্পনা।
তদন্ত শেষ হওয়ার আগে আগুনের কারণ নিয়ে দায়িত্বশীল কর্তারা কিছু বলতে নারাজ। তবে এই ঘটনাকে নাশতকা হিসেবেই মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। এর পেছনে বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে- বড়দিনের কারণে গতকাল সচিবালয় বন্ধ থাকা।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের দুই জায়গায় গতকাল মধ্যরাতে ভয়াবহ আগুন লাগে। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ওই ভবনে থাকা ৫টি মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সব দপ্তর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রশাসনের কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৬ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও দেশের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ প্রাণকেন্দ্রে এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ সবার অজানা। আগুনে সচিবালয়ে পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের নথি পুড়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এই পাঁচ মন্ত্রণালয় হলো ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, সচিবালয়ের ভেতরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
উপদেষ্টা পরিষদ, নিরাপত্তাবাহিনী থেকে শুরু করে সব পর্যায় থেকে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আগুন লাগার কারণ খুঁজতে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডের উৎস ও কারণ উদঘাটন, অগ্নি দুর্ঘটনার পেছনে কারো ব্যক্তিগত বা পেশাগত দায়-দায়িত্ব আছে কি না তা উদঘাটন এবং এ জাতীয় দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে সুপারিশ প্রেরণ। কমিটি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আগুন লাগার কারণ উদঘাটন করতে কাজ করছে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও।



