নতুন বছর আসার উপলক্ষ উদযাপনে ঘড়ি ধরে সময়ের অপেক্ষার তর সইল না; রাত একটু বাড়তেই পাড়া মহল্লার চারপাশে শুরু হয়ে গেল হৈ চৈ, থেমে থেমে ভেসে আসতে থাকল পটকার শব্দ। ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২টা বাজতেই অবিরত আতশবাজির ঝলকানিতে বর্ণিল হয়ে উঠে রাজধানী ঢাকার আকাশ। পাশাপাশি ফুটতে থাকে পটকা। শব্দে প্রকম্পিত হয় চারপাশ। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে এভাবেই একযোগে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ছাদ বা কোথাও মাঠ থেকে আতশবাজি পোড়ানো হয়। কেউ ফানুস উড়ায়।
যদিও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে গিয়ে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য রাজধানীতে এ আয়োজন বন্ধের নির্দেশনা ছিল আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর। এ উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। নিরাপত্তার জন্য রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছেন পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা। অনেক এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
বিধিনিষেধ থাকলেও রাজধানীবাসী মহাধুমধামে আবার কোথাও অল্প পরিসরে আয়োজন করছে পার্টি। আনন্দ-উচ্ছ্বাসের কমতি থাকছে না যেন। অনেকে বাসার ছাদে বারবিকিউ পার্টি, কেক কাটাসহ নানা আয়োজন রেখেছেন। পুরানো বছরকে পাশ কাটিয়ে সমস্ত দুঃখ দুর্দশা ভুলে নতুন উদ্যমে, নতুন প্রত্যাশায় নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজধানীবাসী।
পৌষের রাতের নীরবতা ওই সময়ের আগে পরে খান খান হয়ে গেছে বিকট শব্দে। বাসা বাড়ির ঘরোয়া আয়োজন আর রেস্তোঁরার আনুষ্ঠানিক উদযাপনকে ছাপিয়ে চারপাশ হয়ে উঠেছে বর্ণিল।
এশিয়ার দেশগুলোতে নববর্ষ উদযাপন ভিন্নমাত্রা পায়। জাপানে মন্দিরে ঘণ্টাধ্বনি দিয়ে নতুন বছর শুরু হয়, আর চীনে পরিবারসহ সময় কাটানোর রীতি প্রচলিত। ভারত ও বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রঙিন উৎসব নতুন বছরকে উজ্জ্বল করে তোলে।
নববর্ষ উদযাপনের পদ্ধতি ভিন্ন হলেও, এর মূল বার্তা সবার কাছে এক: নতুন আশা, একতা এবং ভালোবাসার উৎসব। পুরোনো বছরের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন বছরকে আরও সুন্দর ও স্মরণীয় করে তুলতে সবাই অঙ্গীকারবদ্ধ।
আগের কয়েক বছরের মত এবারও উৎসব উদযাপনের আনন্দের বাঁধভাঙা জোয়ারে উবে গেছে নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল। আতশবাজিতে রঙিন হয়ে উঠেছে রাতের আকাশ।