ইতালির আর্থিক ও ফ্যাশন রাজধানী মিলানে ধুমপায়ীদের শহরের রাস্তায় বা জনাকীর্ণ পাবলিক প্লেসে ধুমপান করলে জরিমানা গুনতে হবে। যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে তাদের ৪০ থেকে ২শ’ ৪০ ইউরো জরিমানা করা হতে পারে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) থেকেই জারি করা হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা। এর ফলে ইতালির আর্থিক ও ফ্যাশন রাজধানী মিলানে ধূমপায়ীদের শহরের রাস্তায় বা জনাকীর্ণ পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে জরিমানা গুনতে হবে।
তবে এমন একটি কঠিন বিধান শহরের সমস্ত বাসিন্দারা ভালভাবে মেনে নিতে পারছে না।মিলান থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
নিষেধাজ্ঞার কার্যকরের আগে মরগান ইশাক (৪৬) নামে স্থানীয় এক প্লাম্বার বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, “আমার মতে নতুন আইনটি বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। আমি বাড়ির ভেতরে, বয়স্ক ব্যক্তি বা শিশুর সামনে ধূমপান না করতে রাজি, তবে আমার জন্য বাইরে ধূমপান নিষিদ্ধ করা মানে একজন ব্যক্তির স্বাধীনতাকে সীমিত করা।”
এর আগে ২০২০ সালে সিটি কাউন্সিলে মিলানের বায়ু মানের অধ্যাদেশ পাস করা হয়েছিল এবং এতে ধূমপানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করা হয়েছিল। পরে ২০২১ সাল থেকে পার্ক, খেলার মাঠের পাশাপাশি বাস স্টপ এবং ক্রীড়া স্থাপনাগুলোতে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
নতুন বিধান অনুসারে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কঠোর আইন কার্যকর হয়েছে। রাস্তাসহ সমস্ত পাবলিক স্পেসে এই আইন প্রযোজ্য হবে তবে ‘বিচ্ছিন্ন জায়গাগুলোতে যেখানে ধূমপায়ীদের কাছ থেকে অন্য লোকদের কমপক্ষে ১০ মিটার দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব’ সেখানে ধূমপান করা যাবে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই ব্যবস্থার অন্যতম উদ্দেশ্যে হচ্ছে ‘শহরের বাতাসের গুণমান উন্নত, নাগরিকদের স্বাস্থ্য রক্ষা, পাবলিক স্পেসে পরোক্ষ ধূমপান থেকে সুরক্ষাসহ শিশুদের শ্বাসকষ্ট থেকে রক্ষা করা।’ অবশ্য এই আইনের পক্ষে আছেন অধূমপায়ীরা। স্টেলিনা লম্বার্ডো (৫৬) নামে এক ব্যক্তি বলেছেন, তিনি ধূমপানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করেন।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, একজন ধূমপায়ী পুরুষের জীবন থেকে ১৭ মিনিট এবং নারী ধূমপায়ীর জীবন থেকে ২২ মিনিট কেড়ে নেয় প্রতিটি সিগারেট। অর্থাৎ প্রত্যেকটি সিগারেট পানে গড় হিসেবে একজন ধূমপায়ী তার জীবন থেকে হারান ২০ মিনিট।