ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেস। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানল বৃহস্পতিবারও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। লস অ্যাঞ্জেলসের কর্মকর্তারা বলেছেন ভয়াবহ দাবানলে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। এছাড়া আগুনে ১০ হাজার ঘরবাড়ি, অন্যান্য ভবন ও অবকাঠামো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ছয়টি দাবানলের মধ্যে অনেকগুলোই নিয়ন্ত্রণের পুরোপুরি বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। হারিকেন তীব্রতার বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া এবং পানির চাপ কম থাকায় আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল কর্মীরা। আগুনের তীব্রতা দেখে তা নিয়ন্ত্রণ করার বদলে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন ফায়ার ফাইটাররা। ফলে হতাহতের সংখ্যা বেশ কম হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস মেডিকেল এক্সামিনার কাউন্টি বলছে, মৃতদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শনাক্তকরণে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। কারণ, দাবানল পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তার উদ্বেগের কারণে মেডিকেল পরীক্ষক বিভাগ যথাযথভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না।’ ভুক্তভোগীদের স্বজনদের তথ্য জানানোর প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
এদিকে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলসের দাবানল নিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক দলীয় গভর্নরের সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। ট্রাম্প পানি সংকটের জন্য ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসনের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আগুনে এ পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলসে প্রায় দুই হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এর মধ্যে শতকোটি ডলারের বাড়িও রয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অন্তত সাড়ে তিন লাখ বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। দাবানলে এ পর্যন্ত ৫০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে।
এদিকে হোয়াইট হাউজে এক ব্রিফিংয়ে, বিশেষ ফেডারেল ফান্ড থেকে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দাবানলের কারণে বাতিল করেছেন ইতালি সফর।