জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক হলের একটি কক্ষ থেকে বহিরাগত এক যুবককে আটক করেছে হল কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের এক ছাত্রীর কক্ষ থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
আটককৃত আটক যুবকের নাম আশরাফুল ইসলাম পারভেজ ওরফে যাযাবর পারভেজ। তিনি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানার বাসিন্দা। তিনি ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেন বলে জানিয়েছেন। তবে তার সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানা যায়নি।
হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার আনুমানিক রাত ১০টার দিকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে কপালে টিপ দিয়ে প্লাজু পরে ও মুখে ঘোমটা দিয়ে হলে প্রবেশ করেন। এসময় পোশাক ও হাঁটা দেখে আশপাশের কয়েকজন ছাত্রীর সন্দেহ হয়। পরে তারা হল সুপারকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে বলেন।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পর হল সুপারসহ ওই ছাত্রীর কক্ষে গিয়ে অভিযুক্ত পারভেজ দেখতে পান অন্য শিক্ষার্থীরা। এরপর পারভেজকে হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে পুলিশে দেয়া হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আটক পারভেজকে শাড়ি ও টিপ পরিয়ে দেন হলের ক্ষুব্ধ আবাসিক ছাত্রীরা।
আটক পারভেজ ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা দুজন ভালো বন্ধু। সাত বছরের বন্ধুত্ব আমাদের। আমরা দুজনই লালনভক্ত। আমি হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছি। পরে কপালে টিপ পরে মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে হলে প্রবেশ করি।’
অভিযুক্ত ছাত্রী বলেন, ‘আমরা উভয়েই ভালো বন্ধু। হিম উৎসবে সে এসেছিল। রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে হলে নিয়ে এসেছি। আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।’
এদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রীর স্বামীকে ফোন করলে তিনি পারভেজকে চেনেন না বলে জানান। এরপর, ওই ছাত্রী পারভেজকে শুধুমাত্র ফেসবুক বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সহ-হল সুপার নাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর রুমে সেই পুরুষের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আমাকে জানালে তৎক্ষণাৎ সেখানে যাই। দরজা খোলার পর আমি তাকে খাটের ওপর বসে থাকা অবস্থায় দেখতে পাই। বিষয়টি হল প্রভোস্টকে জানাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘ছেলেটিকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর অভিযুক্ত ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’