Top Newsআন্তর্জাতিক

সহায়তা বন্ধের পর এবার নিশানায় ইউএসএইডের ৬০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা

মোহনা অনলাইন

নির্বাচনী প্রচারণাার সময়ই ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই তা বাস্তবায়ন করেছেন আমেরিকার রিপাবলিকান এই নেতা।

মূলত বিভিন্ন দেশকে এত দিন উন্নয়নের জন্য যে আর্থিক সাহায্য দিত যুক্তরা‌ষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড, তা বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্পের প্রশাসন। আর সহায়তা বন্ধের পর এবার ট্রাম্প প্রশাসনের নিশানায় ইউএসএইডের প্রায় ৬০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এসব কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর প্রায় ৬০ জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠিয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত বেশ কয়েকটি সূত্র একথা জানিয়েছে। ওয়াশিংটন বিশ্বব্যাপী মার্কিন সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে স্থগিতাদেশ জারি করার পর এই সিদ্ধান্ত নিলো ট্রাম্প প্রশাসন।

রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পের “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির সাথে সঙ্গতি রেখে ওয়াশিংটন কীভাবে বিশ্বজুড়ে সহায়তা বরাদ্দ করতে পারে সেবিষয়ে শনিবার ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএইড কর্মীদের অনুরোধ করেছে এবং ট্রাম্পের আদেশ উপেক্ষা করলে যেকোনও কর্মীর বিরুদ্ধে “শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা” নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় ইউএসএইড কর্মীদের কাছে পাঠানো একটি অভ্যন্তরীণ মেমোতে বলা হয়েছে, নতুন নেতৃত্ব এজেন্সিতে বেশ কয়েকটি ক্রিয়াকলাপ চিহ্নিত করেছে যা “প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ এবং আমেরিকান জনগণের ম্যান্ডেটকে এড়াতে সৃষ্টি করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”

রয়টার্স এই মেমোটি পর্যালোচনা করেছে। মেমোতে ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক জেসন গ্রে বলেন, “ফলে, আমরা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইউএসএইডের বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে পুরো বেতন এবং সুবিধাসহ প্রশাসনিক ছুটিতে রেখেছি এবং এই সময়ের মধ্যে আমরা এই ক্রিয়াকলাপগুলোর সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করব।”

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে কতজন কর্মকর্তা ক্ষতির মুখে পড়েছেন তা মেমোতে উল্লেখ করা হয়নি, তবে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত পাঁচটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইউএসএইডের প্রায় ৫৭ থেকে ৬০ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারি ইসরায়েল এবং মিসর ছাড়া বিশ্বের সব দেশের জন্যই আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দেয় ট্রাম্পের প্রশাসন। নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সেসময় জানান, নতুন করে সাহায্যের বিষয়গুলো অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত এই সাহায্য দেওয়া যাবে না। আগামী ৮৫ দিনের মধ্যে বিদেশে সহায়তার বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হবে। আর এরপরই এই বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ট্রাম্প সরকার।

অবশ্য নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতি গ্রহণ করা হবে। আর প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সেই নীতির অধীনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্পের প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালে বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার, ২০২২ সালে ৪৭০ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালে ৪৯০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button