Top Newsআন্তর্জাতিক

কঙ্গোর কারাগারে শতাধিক নারীকে ধর্ষণের পর জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

মোহনা অনলাইন

গত সপ্তাহে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম ২৩ বিদ্রোহীদের হামলার সময় শত শত নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং আগুনে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিবিসির দেখা জাতিসংঘের একটি অভ্যন্তরীণ নথিতে বলা হয়েছে, জেল ভাঙার সময় ১৬৫ থেকে ১৬৭ জন নারী বন্দি পুরুষ বন্দিদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর উপপ্রধান ভিভিয়ান ভ্যান ডি পেরে জানিয়েছেন, ঘটনার সময় কারাগার থেকে প্রায় চার হাজার পুরুষ বন্দি পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও, নারীদের অংশটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘কারাগারে থাকা শত শত নারীকে ধর্ষণ করা হয়, এরপর তাদের কক্ষগুলোতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়। রুয়ান্ডা সমর্থিত এম২৩ পূর্ব ডিআর কঙ্গোর মধ্য দিয়ে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার পর ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যার একটি প্রধান শহর গোমা দখল করা হয়েছিল। শহরটিতে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা, রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে ছিল এবং আবাসিক বাড়িগুলোর ওপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র উড়ছিল বলে জানা গেছে।

গত সপ্তাহের জেল ভাঙার ফুটেজে দেখা গেছে, লোকেরা ভবন থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড গুলির শব্দও শোনা যাচ্ছে এবং ভবনগুলো থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। একটি পৃথক ভিডিওতে গোমার রাস্তা দিয়ে তোলা লোকজনকে পালিয়ে যাওয়া বন্দি বলে মনে করা হচ্ছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধের সময় কমপক্ষে ২ হাজার ৯০০ জন নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার মৃতদেহ সমাহিত করা হয়েছে এবং আরো ৯০০ জন এখনো শহরের মর্গে রয়েছে। এই সপ্তাহের শুরুতে বিদ্রোহীরা মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। তবে সূত্র জানায়, এম২৩ বুধবার একটি নতুন আক্রমণ শুরু করে খনির শহর নিয়াবিবওয়ে দখল করেছে নিয়াবিবওয়ে পূর্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বুকাভু থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) দূরে অবস্থিত এবং বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক অগ্রযাত্রার লক্ষ্যবস্তু।

কঙ্গোর কর্তৃপক্ষ বুকাভুকে রক্ষা করতে শত শত বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে। ইতিমধ্যে মালাউই ঘোষণা করেছে, তারা দেশ থেকে তার শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রত্যাহারের প্রস্তুতি শুরু করবে। গোমার আশপাশের লড়াইয়ে তিনজন সেনা নিহত হওয়ার পর তারা এ কথা জানান। তারা দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্বে একটি দক্ষিণ আফ্রিকান বাহিনীর অংশ ছিল। যদিও ১৪ জন দক্ষিণ আফ্রিকান সেনা নিহত হয়েছেন, তবুও রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসা ডিআর কঙ্গোতে তার বাহিনী রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এদিকে গোমার বাসিন্দারা এম২৩-এর অধীনে জীবনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন, সেখানে কলেরা প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা রয়েছে। দাতব্য সংস্থা মেডিসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ)-এর আঞ্চলিক প্রধান স্টিফান গোয়েটঘবুয়ার বলেছেন, ‘সারা দিন পানির সরবরাহ বন্ধ রয়েছে, রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে আছে এবং কলেরার মতো জলবাহিত রোগের হুমকি। তিনি আরো বলেছেন, ‘আমাদের কিছু কলেরা চিকিৎসাকেন্দ্র পূর্ণ এবং সম্প্রসারিত করা হয়েছে।’

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button