রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে আগামী সপ্তাহে জরুরি সম্মেলনে বসতে যাচ্ছেন ইউরোপীয় নেতারা।ওই আলোচনায় ইউক্রেনের প্রতিনিধিত্ব থাকলেও ইউরোপকে সম্পৃক্ত করা হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের এমন উদ্যোগের মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে প্যারিসে ইউরোপের নেতারা আগামী সপ্তাহে এক জরুরি সম্মেলন ডেকেছেন।
প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের। তিনি বলেন, এটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ‘প্রজন্মে একবার আসা মুহূর্ত’ এবং এটা স্পষ্ট, ইউরোপকে ন্যাটোতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে।
স্টারমার বিশ্বাস করেন, তাঁর ভূমিকা হবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে একত্রিত করা, যাতে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করা যায়। এই মাসের শেষে হোয়াইট হাউসে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ইউরোপীয় নেতাদের মতামত নিয়ে আলোচনা করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
স্যার কিয়ার ওয়াশিংটন থেকে ফিরে এলে ইউরোপীয় নেতাদের আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও উপস্থিত থাকবেন।
স্যার কিয়ার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে একসঙ্গে রাখার জন্য কাজ করবে যুক্তরাজ্য। এই দুই শক্তি আমাদের বাহ্যিক শত্রুদের থেকে মনোযোগ সরানোর সুযোগ দিতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, এটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এক প্রজন্মে একবার আসা মুহূর্ত, যেখানে আমাদের আজকের বাস্তবতা ও রাশিয়া থেকে আসা হুমকির বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে মনোযোগী হতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় নেতাদের একত্রিত করে একটি জরুরি বৈঠকের আয়োজন করেছেন বলে জানিয়েছেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাভ সিকোর্সকি।
জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বক্তৃতাকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ইউরোপের নিজস্ব প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠনের সময় এসেছে। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে ইউরোপ ও আমেরিকার পুরনো সম্পর্ক বদলে যাচ্ছে এবং ইউরোপকে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
জেলেনস্কি আরও বলেন, “আমাদের অগোচরে কোনো চুক্তি হলে তা আমরা কখনোই মেনে নেব না।”
অপরদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপ করেছেন এবং অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা শুরু করতে চান।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সৌদি আরবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান মাইকেল ম্যাককল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং ১২ ফেব্রুয়ারির ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের ভিত্তিতে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, ইউরোপের দেশগুলোর অবশ্যই প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, “পুতিন চলে যাবেন না, তাই আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।”



