সাবেক স্বাস্থ্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম বুলবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে রাজধানী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান রেজাউল করিম মল্লিক।
এদিকে সকাল সোয়া ১০টার দিকে ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘তাকে বাসা থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা আছে। এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
২০২৩ সালের অক্টোবরে জাহাঙ্গীর আলম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব হন। গত ২০ আগস্ট তাকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে বদলি করা হয়। একই মাসের ২৮ অক্টোবর তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় সরকার।
জাহাঙ্গীর আলম একসময় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-১ ছিলেন। তিনি সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড এবং সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালে তিনি সচিব পদে পদোন্নতি পান।
দিনের ভোট রাতে নেওয়ার অন্যতম কারিগর ছিলেন জাহাঙ্গীর। তিনি শেখ হাসিনার এতটাই আস্থাভাজন ছিলেন যে, ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রলীগ নেতা থেকে আমলা বনে যাওয়া জাহাঙ্গীরের কর্মজীবন জুড়ে বেশির ভাগ সময়ই দুর্নীতিপ্রবণ প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগে সিনিয়র সহকারী সচিব, উপসচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে অতিরিক্ত সচিব এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
৫ আগস্ট ক্ষমতা থেকে উৎখাত শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে গেলে প্রথম ধাক্কায় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে তিনি সস্ত্রীক দেশত্যাগের চেষ্টা চালান। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
জাহাঙ্গীর আলমের গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। তিনি বিসিএস একাদশ ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের সদস্য হিসেবে ১৯৯৩ সালে চাকরিতে যোগ দেন।



