
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকা সফরে গেছেন। ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ছিল দুই নেতার মধ্যে প্রথম বৈঠক। এরই মধ্যে ট্রাম্পের একটি বড় বক্তব্য সামনে এসেছে।
ভারতীয় ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহ দিতে ২১ মিলিয়ান ডলারের অনুদান বন্ধ করেছে আমেরিকা। এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে এবার মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানালেন, “ভারতের প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের করদাতাদের ২১ মিলিয়ন ডলার কেন আমরা ভারতকে দেব?”
বিশ্বের নানা প্রান্তে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে ৪৮৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছিল জো বাইডেন প্রশাসন। তার মধ্যে ভারতের জন্য বরাদ্দ ছিল ২১ মিলিয়ন ডলার। তবে ডোলান্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরই ‘অপব্যয়’ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাঁচি পড়েছে বিশ্বের নানা ক্ষেত্রে মার্কিন অনুদানে। বাদ যায়নি ভারতও। অপব্যয় কমাতে ট্রাম্প সরকারের তরফে যে কমিটি গঠিত হয়েছে তার প্রধান ধনকুবের এলন মাস্ক গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সোশাল মিডিয়ায় জানিয়ে দেন, ভারতীয়দের নির্বাচনে উৎসাহিত করতে ২১ মিলিয়ন ডলার খরচ করত আমেরিকা। ভারতীয় মুদ্রায় এই অঙ্কটা প্রায় ১৮২ কোটি টাকা। সেই টাকা আর দেওয়া হবে না। ভারতের পাশাপাশি অনুদান বন্ধ করা আরও বহু দেশের তালিকাও তুলে ধরা হয়। আমেরিকার এই সিদ্ধান্তে বিতর্ক শুরু হতেই এবার মুখ খুললেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ফ্লোরিডায় নিজের বিলাসবহুল রিসর্ট মার-এ-লাগোতে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “কেন আমরা ভারতকে ২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছি? তাদের অনেক টাকা আছে। আমাদের ওপর সর্বোচ্চ কর চাপানো দেশগুলির মধ্যে একটি ভারত। তাদের শুল্ক অনেক বেশি হওয়ার জেরে আমরা তাদের বাজারে প্রায় প্রবেশই করতে পারি না। ভারত এবং তাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার জন্য ভোটারদের উৎসাহ দিতে আমরা ২১ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেব?”
কেবল ভারত নয়, বাংলাদেশ-নেপালের মতো আরও নানা দেশের অনুদানও বন্ধ করে দিয়েছে মাস্কের দপ্তর। বিশ্বজুড়ে লিঙ্গসমতা, গণতন্ত্র, নারী ক্ষমতায়নের খাতে বরাদ্দেও কাঁচি চালানো হয়েছে। দপ্তরের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মাস্ক সাফ জানিয়েছিলেন, খরচ না কমালে দ্রুতই দেউলিয়া হয়ে যাবে আমেরিকা। তাই কাটছাঁটের ঘোষণা করে মাস্কের দপ্তর জানিয়েছে, বিদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যেসব কার্যকলাপ নিয়ে ‘প্রশ্ন’ রয়েছে, মার্কিন করদাতাদের টাকায় চলা সেসব কাজ বন্ধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, বাইডেন জমানায় ভারতের মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, সংখ্যালঘুদের অবস্থা, গণতন্ত্র-এসব ইস্যুতে বারবার ভারতকে বিঁধেছে আমেরিকা। সেসব মোটেই ভালোভাবে নেয়নি শাসক দল বিজেপি। তবে ট্রাম্পের তরফে এসব ইস্যুতে কোনও সমালোচনার মুখে পড়তে হবে না বলেই ধরে নিয়েছিল কূটনৈতিক মহল। নয়াদিল্লির সেই ধারণাকে সত্যি করেই ভারতীয় ভোটারদের উৎসাহ দেওয়ার অনুদান বন্ধ করল মাস্কের দপ্তর, মত ওয়াকিবহাল মহলের।