যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার ইউক্রেন নিয়ে তাদের পরিষ্কার মতপার্থক্য জনসমক্ষে তুলে ধরেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে চায় ইউরোপ।
রাশিয়ার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। খবর আল-জাজিরার।
দিনব্যাপী আলোচনার সময় দুই নেতা, ট্রাম্প এবং ম্যাক্রোঁর মধ্যে অনেক বছরের সম্পর্কের উপর গড়া ঘনিষ্ঠতা দেখা যায়। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তিন বছর পুর্তি স্মরণ করার সময় ম্যাক্রোঁ পরিষ্কার করে দেন যে, তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ট্রাম্পের সাথে একমত নন।
ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেন্সকিকে স্বৈরশাসক হিসেবে অভিহিত করেন, কিন্তু তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে স্বৈরশাসক বলতে অস্বীকৃতি জানান। ম্যাক্রোঁ বলেন এটা পরিষ্কার যে এই সংঘাতে রাশিয়া “হচ্ছে আগ্রাসী।” এই বিষয়ে ট্রাম্প গত সপ্তাহে দোদুল্যমান ছিলেন।
“প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তি লংঘন করেছেন,” ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পের সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন। ট্রাম্প যত শীঘ্র সম্ভব যুদ্ধ বিরতির জন্য আশা প্রকাশ করেন, এবং বলেন যে তিনি রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে একটি যুদ্ধ বিরতির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হলে তিনি মস্কোতে পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
অন্যদিকে, ম্যাক্রোঁ আরও ধীর গতির প্রচেষ্টার আহ্বান জানান। যুদ্ধ বিরতি দিয়ে শুরু, তারপর নিরাপত্তা গ্যারান্টিসহ শান্তি চুক্তি। “আমরা শান্তি চাই, তিনি শান্তি চান। আমরা দ্রুত শান্তি চাই, কিন্তু আমরা কোন দুর্বল চুক্তি চাই না,” ম্যাক্রোঁ সাংবাদিকদের বলেন।
ম্যাক্রোঁর এই সফর এমন এক সময়ে হলো যখন ট্রাম্প তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত সমাপ্তির আহ্বান জানাচ্ছেন। ট্রাম্প ইউক্রেন বা ইউরোপীয় নেতাদের অংশগ্রহণ ছাড়াই মার্কিন-রাশিয়া আলোচনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, যা ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সোমবার ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ বন্ধে অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছি।’ পরবর্তীতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যয় ইউরোপেরই বহন করা উচিত।
ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি হলে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষীরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুত থাকবে। ট্রাম্পও এ ধারণাকে সমর্থন করেছেন এবং জানিয়েছেন, তিনি এই বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।



