Top Newsআন্তর্জাতিকজাতীয়

ট্রাম্পের, ট্রাম্প কার্ড

শাহীন রাজা: গোল্ড কার্ডের মধ্য দিয়ে নাগরিকত্বের নতুন পথ তৈরি করলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এ বার আমেরিকার নাগরিকত্ব পেতে হলে গুনতে হবে পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই পরিমাণ টাকা দিলেই মিলবে ‘গোল্ড কার্ড’ ! টাকা সাদা না কালো সে কথা বলা হয়নি কিন্তু !

একই দিনে ইউক্রেন তার খনিজ সম্পদ আমেরিকার কাছে সমর্পণ করতে সম্মত হয়েছে। ইউক্রেনের খনিজে যুক্তরাষ্ট্রর দখলে চলে যাচ্ছে। অথচ অতি সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছিলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কোন সমঝোত করবো না। পরাশক্তি নিয়ন্ত্রিত পৃথিবীতে তৃতীয় বিশ্বের কোন নেতার মুখের কথার কোনোই মূল্য নেই। এটা আবারও প্রমাণিত হলো। জেলেনস্কির বক্তব্যের পর এক সপ্তাহ-ও যায়নি। খনিজ সম্পদ নিয়ন্ত্রণেের আমেরিকার প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে !

ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়ার পরই কানাডা, মেক্সিকো, চীন, ভারতে উপর অতিরিক্ত ট্যারিফ বা কর আরোপের ঘোষণা দেন। একমাত্র চীন ব্যতীত বাকী দেশগুলো আমেরিকার সাথে সমঝোতায় যেতে হয়েছে। এবং ট্রাম্প বলে দিয়েছেন, তাঁর নির্দেশিত প্রতিষ্ঠানের সাথে বানিজ্য করতে হবে ! এই সমঝোতা হওয়ার পর, পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ট্যারিফ কমিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে বাংলাদেশে-ও ২৯ মিলিয়ন ডলারের ‘প্যান্ডোরা বাক্স’ খুলেছেন। কাকে টাকাটা দেওয়া হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে কিছুই বলেননি। তবে আঙ্গুল উঁচিয়েছেন বাংলাদেশের দিকে। সন্দেহের দোলাচল গোটা দেশজুড়ে। সন্দেহ, অবিশ্বাস একে অপরের প্রতি ! দেশের মানুষের মুখে একটাই কথা, টাকাটা গেল কোথায়। টাকাটা পেল কারা ?
এর মধ্যে দিয়ে ট্রাম্প একটা অভিনব খেলা, খেলেছে ! বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ব্যবহারের জন্য গত কয়েক বছর ধরে একটা সুবিধা চেয়ে আসছে। হয়-তো এই প্যান্ডোরার বাক্স খোলার মধ্য দিয়ে তা আদায় করবার চেষ্টা করবে।হয়তো তাদের সেই চাওয়া পূরণও হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন করপোরেট ব্যবসায়ী। তাঁর একটাই আকাঙ্খা পৃথিবীর সম্পদ আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে আনা। এইজন্য সকল দেশের দূর্বল জায়গায় খোঁচা দিয়ে সুবিধা তুলে নেয়া। এ-ই কারণে তাঁর সহযোগী হিসেবে রেখেছেন এ্যালেন মাস্ক এবং আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে। আরেক একনায়ক এবং বিশ্বের এক প্রধান শক্তিধর দেশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সাথে নিয়ে চলতে চাইছেন।

‘গোল্ড কার্ড’ ভিসা চালু হবার পৃথিবীর সকল ব্যবসায়ীরা আমেরিকায় ফার্স্ট বা সেকেন্ড হোম হিসেবে বসবাস করবে। এতে তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্র নায়ক এবং দূর্ণীতি পরায়ন ব্যবসায়ীরা উদ্বুদ্ধ হবে। নিজ দেশের টাকা লুটপাট করে আমেরিকায় নাগরিকত্ব লাভার মাধ্যমে নিরাপদ বসবাস করবে। এবং বিশ্বের সকল বৈধ এবং অবৈধ অর্থ আমেরিকায় জড়ো হবে। আমেরিকায় থাকবে না অর্থনৈতিক মন্দা। এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে বেকায়দায় ফেলে তাঁর ব্যাবসায়ী সহযোগীদের ব্যবসা করার সুযোগ সৃষ্টি করা। আমেরিকায় সৃষ্টি হবে বেশ কয়েকজন ‘অলিগার্ক’। হয়তো পৃথিবীর সকল আন্তর্জাতিক ব্যবসা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাককে।

আগামী ভবিষ্যৎ কি হবে তা এখনই বলা যাবে না। তবে এব্যাপারে অতীতের কাছ থেকে ধারণা নেয়া যেতে পারে। বেশী দুর নয়, দেড়শ বছর আগেও শিশুদের পাঠ্য লেখা হতো, বৃটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য অস্ত যায় না। এখন শুধুই একটা বড়সড় দ্বীপ রাষ্ট্র। বৃটিশ-ও চীনে জড় করে আফিম বানিজ্যের জন্য যুদ্ধ করেছে। এবং আফিম ব্যবসা চালু রাখতে বাধ্য করিয়েছিল। বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতা হচ্ছে যুক্তরাজ্য, চীনকে সমীহ করে চলে !

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button