আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। বন তথা আবাস উজাড়, চোরা শিকার ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের মতো বিভিন্ন কারণে প্রতিবছর পৃথিবী থেকে কোনও না কোনও বন্য প্রাণী চিরতরে বিলুপ্ত হচ্ছে বা বিলুপ্তির মুখে পড়ছে।
বিলুপ্তপ্রায় এসব প্রাণী রক্ষা করতেই সারা বিশ্বে প্রতি বছর ৩ মার্চ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস পালন করা হয়। বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অর্থায়ন, মানুষ ও ধরিত্রীর উন্নয়ন’।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যা। এ জনসংখ্যার বড় একটি অংশের বসবাসের জায়গা করে দিতে ধ্বংস করা হচ্ছে বন। যার ফলে খাদ্য আর বাসস্থানের সংকটে বিলুপ্তির পথে বন্যপ্রাণীরা। বন উজাড়, পাখি শিকারিদের ফাঁদে উপকূল থেকে বন্যপ্রাণীদের আশঙ্কাজনকভাবে বিলুপ্তি ঘটেছে।
জাতিসংঘের এক তথ্যমতে, বর্তমানে বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির হার গত ১০ লাখ বছরের তুলনায় অন্তত দশ থেকে শতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো লাতিন আমেরিকা ও আমাজনে বন উজাড়ের হার বৃদ্ধি। ইতিমধ্যে মূল বনভূমির ১৭ শতাংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, আর ১৭ শতাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএনের আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৩১টি। তবে এ সংস্থাটির দাবি বাংলাদেশে ১ হাজার ৬০০ এর বেশি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৯০টি একেবারে শেষ হওয়ার পথে।
বিশ্ব প্রাণী দিবস সর্বপ্রথম হেনরিক জিম্মারমেন নামের একজন জার্মান লেখক ও প্রকাশক মেন্স উন্ড হুন্দ (মানুষ ও কুকুর) নামের একটি ম্যাগাজিনে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি প্রথম ১৯২৫ সালের ২৪ মার্চ জার্মানির বার্লিন স্পোর্ট প্যালেসে এই দিবস উদযাপন করেন। সেখানে ৫ হাজারের অধিক মানুষ অংশ নেন।
১৯২৯ সালে প্রথমবারের মতো এই দিবসটি ৪ অক্টোবর পালন করা হয়। প্রথমদিকে তিনি কেবল এ দিবসে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড ও চেকোস্লোভাকিয়ার অনুসারী পেয়েছিলেন। অবশেষে ১৯৩১ সালে ইতালির ফ্লোরেন্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রাণী সুরক্ষা কংগ্রেসে তার উত্থাপন করা প্রস্তাব মতে ৪ অক্টোবরকে বিশ্ব প্রাণী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। বর্তমানে বিশ্ব প্রাণী দিবস একটি বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাণী কল্যাণ চ্যারিটি নেতৃত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে।



